বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সেমিকন্ডাক্টর গবেষণা ফার্ম সেমিঅ্যানালাইসিস-এর প্রধান বিশ্লেষক ডিলান প্যাটেল সম্প্রতি একটি তথ্য জানিয়েছেন। গুগলে যখন কেউ কোনো কিছু খোঁজ করেন তখন তাকে খরচ করতে হয় না। এমনকি ঐ সার্চ পরিচালনার জন্য গুগলকেও তেমন ব্যয় করতে হয় না। কিন্তু চ্যাটজিপিটির ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি খোঁজ করলে চ্যাটজিপিটিকে খরচ করতে হয়।
যেকোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত চ্যাটবটের পেছনে প্রতিষ্ঠানকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটে কম্পিউটার চিপ পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে। দামও বেড়েছে অনেক। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিস্টেম তৈরি করার কাজটি সহজ নয়। বরং ভীষণ কঠিন। তাছাড়া প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক টম গোল্ডস্টেইন বলেন, ‘বর্তমানে যেসব মডেল দেখা যাচ্ছে, এগুলো যতই আশ্চর্যজনক হোক না কেন, এ মডেলগুলো এখনো তাদের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাতে পারেনি।’
এআই পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রচুর কম্পিউটিং পাওয়ার দরকার হয়। কাজটি কিন্তু সহজ নয়। আর এই কাজের জন্য যে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হয় তার খরচ আন্দাজ করা যাচ্ছে না। ওয়াশিংটন পোস্ট সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে এবং বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেছে। সমস্যা হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালনায় আদৌ প্রচুর খরচ হয় কি-না এ বিষয়ে মুখ খোলেনি কোনো প্রতিষ্ঠানই। জিপিটি-৪ পরিচালনা করার পেছনে খরচের পরিমাণ এত বেশি যে, যারা এটি মাসিক ২০ ডলারের বিনিময়ে কিনেছেন, তারাও প্রতি তিন ঘণ্টায় কেবল ২৫টি প্রশ্ন বা অনুসন্ধান পাঠাতে পারেন। এ বিপুল খরচই হয়তো গুগলের এখনো এর সার্চ ইঞ্জিনে এআই চ্যাটবট যোগ না করার একটি বড় কারণ। এ বছরের মার্চে উন্মুক্ত করা গুগলের এআই চ্যাটবট বার্ড-এর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বৃহৎ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহার করেনি।
একজন ব্যবহারকারী যখন চ্যাটজিপিটির মতো কোনো এআই চ্যাটবটের কাছে কোনো কিছু জানতে চান, তখন তা প্রথমে ডেটা সেন্টারে যায়। সেখানে সুপারকম্পিউটার অসংখ্য দ্রুতগতির ক্যালকুলেশন করে। প্রথমে ব্যবহারকারী যা জানতে চেয়েছেন (প্রম্পট) তার ব্যাখ্যা তৈরি করে কম্পিউটার, তারপর সে অনুযায়ী সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরটি প্রদান করে। এ ধরনের কম্পিউটিং কাজের জন্য প্রয়োজন হয় গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট তথা জিপিইউ’র। এগুলো সাধারণত ভিডিও গেমের জন্য তৈরি করা হলেও এখন বড় ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলো রান করতে পারার সক্ষমতা কেবল এই চিপগুলোরই রয়েছে।
এই কম্পিউটিং এর জন্য এনডিভিয়া সবচেয়ে ভালো কম্পিউটিং ডিভাইস উৎপাদক। কিন্তু এসব পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। তাই প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচের কথা কিছুটা হলেও আন্দাজ করে দেখা যায়।
এ সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাহলে টিকে থাকবে কিভাবে। কদিন আগেও আমরা দেখতে পেয়েছি গুগল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ধিরগতিতে কাজ করে। তাহলে এই খরচ কমিয়ে তারা আনবে কিভাবে? সেক্ষেত্রে সাবস্ক্রিপশন ফি চালু করা যেতেই পারে। আবার সামনে সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিজ্ঞাপনও দেখা যাবে। এমনটি অস্বাভাবিক না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।