জুমবাংলা ডেস্ক : অনেকেই অনেক রকম ভাবে প্রতারণা করে থাকে। বিভিন্ন জনের প্রতারণা কৌশল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। কিন্তু জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পাল্লাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ প্রতারণার প্রতারণার কৌশল ব্যতিক্রম। তিনি প্রতারণার এক অভিনব কৌশল রপ্ত করেছেন। স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ কৌশলে ও বিভিন্ন প্রলোভনে মেয়েদের ফাঁসিয়ে তাদের বিয়ে করেন। মেয়েদের ফাঁসানোর প্রধান হাতিয়ায় শিক্ষক পেশা। এই পেশার শক্তিতেই সহজেই মেয়েদের কাছে পৌঁছায় সে। কারণ শিক্ষক হচ্ছে মহান পেশা। শিক্ষকতাকে পুঁজি করেই প্রতারণার জাল ফেলেছেন কালাম।
এভাবেই একের পর এক বিয়ে করে যাচ্ছেন তিনি। কিছুদিন সাংসারিক জীবন বেশ আনন্দে পার করলেও। ধীরে ধীরে তা বিরক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে যাচ্ছে। তখন শুরু হয় প্রতারণার নতুন ধাপ। বিভিন্ন প্রয়োজনে স্ত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের প্রয়োজনে খরচ করে স্কুলশিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। দিন দিন বাড়তে থাকে তার চাহিদা। একসময় স্ত্রীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া শেষ হলে স্ত্রীদের জমি নিজের নামে লিখে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একসময় স্ত্রীরা তার চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হলে শুরু হয় মারধর এবং বিভিন্ন নির্যাতন। এমনকি তাদের শুনতে হয় তালাক নামের নিষ্ঠুর বাক্য। এইভাবে দীর্ঘ দিন থেকে প্রতারণা করে আসছে পাল্লাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বামী। একে একে বিয়ে করেছেন ৫টি, প্রত্যেক স্ত্রীই তার প্রতারণার শিকার।
তার প্রতারণার মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকলে স্থানীয় এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে এবং ভুক্তভুগী স্ত্রী বাহাদুরাবাদ ইউপি সদস্য মাজেদা বেগম আজ শনিবার (২৬ মার্চ) সরদারপাড়া বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে স্থানীয় বৃদ্ধ, তরুণ, মহিলা ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলেই প্রতারক স্কুলশিক্ষক স্বামীর কঠোর শাস্তি দাবি করেন। তার দৃষ্টান্ত শাস্তি হলে সমাজ থেকে অপরাধ দূর হবে বলে মনে করেন তারা।
ভুক্তভুগী স্ত্রী বাহাদুরাবাদ ইউপি সদস্য মাজেদা বেগম জানান, ২০১১ ইং সালে পাল্লাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের সাথে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের পূর্বে তার চরিত্র গোপন রেখে স্কুলশিক্ষকের পেশা সামনে এনে আমায় বিয়ে করে। বিয়ের সময় আমাকে ফসলিয়ে আমার ১৭ শতাংশ জমি লিখে নেয়। সাংসারিক জীবনের কিছুদিনের মধ্যেই তার আসল চেহারা আমার সামনে আসতে থাকে। আমি এই বিষয় নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে আমাকে মারধর এবং অসহ্য অত্যাচার শুরু করে। অবশেষে আমায় তালাক দিয়ে নতুন এক মেয়েকে বিবাহ করে। শুনেছি তাকেও টাকার জন্য নির্যাতন করছে সে।
স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন, আব্দুল মজিদ বলেন, আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন থেকে বিয়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছে। স্কুলশিক্ষকের পেশা মেয়েদের ফাঁসিতে সবথেকে বেশি কাজে দেয় তার। তার এই পেশাকে বিশ্বাস করে অনেক মেয়েই প্রতারিত হয়েছেন। এমনকি তার বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত ছাত্রীও রেহায় পায়নি তার প্রতারণা থেকে। পরবর্তীতে যেন কেউ তার প্রতারণার জালে না ফাঁসে, যার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা সম্মিলিত ভাবে মানবন্ধন করছি। মানবন্ধনে বক্তারা প্রতারক স্বামী আবুল কালাম আজাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
মানবন্ধন শেষে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মেহের উল্লাহ বলেন, শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ একাধিক বিবাহ করেছেন বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। সে যে অন্যায় করেছেন তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ইতিমধ্যেই ব্যাবস্থা গ্রহন করেছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাথে আমিও একমত পুষণ করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।