বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : অ্যাসিরিয়ান এবং প্রাচীন মিশরীয়রা নিজের চোখ সাজাতো কালো খনিজ স্টিবনাইট দিয়ে। এর রাসায়নিক নাম অ্যান্টিমনি সালফাইড। এর থেকেই অ্যান্টিমনি তার রাসায়নিক প্রতীক Sb এসেছে। স্টিলবিন আরবি কোহল (kohl)।
বাংলায় সুরমা। আইলাইনারে ব্যাপ জনপ্রিয়।
আল-কোহল শব্দটি যেকোনো মিহি পাউডারের পরিচয় বহন করে। আর এ শব্দটি ‘অ্যালকোহল’ নামটি, তবে এটা ব্যবহার করা হয় তরলের ক্ষেত্রে।
অ্যান্টিমনি সালফাইডের চোখের সংক্রমণ নিরাময় করার গুণ আছে। তাই এটি বেশ ভালো একটি ওষুধও বইকি। মধ্যযুগের অ্যালকেমিস্টগণ এই ওষুধিগুণকে সমীহ করতেন। ১৬০৪ সালে রসায়নবিদ বেসিল ভ্যালেন্টাইন ছদ্মনামে ‘দ্য ট্রায়াম্ফাল চ্যারিয়ট অফ অ্যান্টিমনি’ বইয়ে বিষয়টি দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
সতের শতকে অ্যান্টিমনি তর্ক দেখে বিশ্ব। তর্কে সবচেয়ে বেশি জড়ান ফরাসি রসায়নবিদেরা। অ্যান্টিমনি বিষ না নিরাময়কারী— এই ছিল তর্কের বিষয়। প্রকৃতই, অ্যান্টিমনি বেশ বিষাক্ত। বেসিল ভ্যালেন্টাইন দাবি করেছিলেন, তিনি একটি আশ্রমে এটি পরখ করেছেন।
সেখানে কিছু সন্যাসী বিষক্রিয়ায় মারা যান।
ভিক্টোরিয়ান খুনিদের পছন্দের বিষ হিসেবে অ্যান্টিমনি ছিল অন্যতম। কারণ এটি স্লো-পয়জন। প্রয়োগে ধীরে ধীরে বিষাক্ত প্রভাব কাজ করে। সহজে কেউ সেই বিষের প্রভাব ধরতেও পারবেন না। ১৬ শতকে প্রথম বিশুদ্ধ অ্যান্টিমনি প্রস্তুত হয়। দেখতে অনেকটা রুপালি ধাতুর মতো। ধাতু ও অধাতুর মধ্যবর্তী একটি মৌল। অর্থাৎ অ্যান্টিমনির মাঝে ধাতু ও অধাতু উভয়ের ধর্মই পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ পরিবাহী নরম অধাতু। লেড ও টিনের সংকর হিসেবে অ্যান্টিমনির ব্যবহার সর্বাধিক।
দশা
রাসায়নিক সংকেত: Sb
পারমাণবিক সংখ্যা: ৫১
নামকরণ: বিতর্কিত বুৎপত্তি। ধারণা করা হয় অ্যারাবিক বা গ্রিক থেকে এসেছে।
বিক্রিয়া
অ্যান্টিমনি শরীরে প্রবেশ বিষাক্ততার কারণে বমি হতে পারে। মধ্যযুগে মৌলটির ব্যবহার ছিল পরিশোধক (purgative) হিসেবে। শরীরের রোগ নিরাময়ের ভালো একটি মাধ্যম হিসবে চল অ্যান্টিমনির ওষুধ। রয়েছে রেচক বৈশিষ্ট্য। কৌষ্ঠকাঠিন্যের সমাধানে বিশুদ্ধ অ্যান্টিমনি ট্যাবলেট গিলে খেলে পাওয়া যেত উপশম। শরীরে শোষিত না-হলেও নির্গত অ্যান্টিমনি পুনঃব্যবহার করা হতো।
অ্যান্টিমনির সাথে সম্পর্কিত মৌল
আর্সেনিক (As 33)
বিসমাথ (Bi 83)
জীবনবৃত্তান্ত
জন অফ রুপেসিসা
১৩১০-১৩৬২
ফ্রেঞ্চ রসায়নবিদ। অ্যালকেমিস্ট্রির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে অ্যান্টিমনিকে রাখেন।
জোহান থলডে
১৫৬৫-১৬১৪
জার্মান প্রকাশক। ‘দ্য ট্রায়াম্ফাল চ্যারিয়ট অফ অ্যান্টিমনি’ প্রকাশ করেন।
বর্ণনা
ফিলিপ বল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।