জুমবাংলা ডেস্ক : মাদারীপুরের শিবচরে একটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলার গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম সাদ্দাম মোল্লা। তিনি শিবচরের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের অছিম বেপারীর কান্দি গ্রামের দলিল উদ্দিন মোল্লার ছেলে। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চৈতা মোল্লার কান্দি এলাকায় বসবাস করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের শরীফকান্দি এলাকা থেকে ইয়ামাহা ব্রান্ডের কালো রঙ্গের একটি আরওয়ানফাইভ চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। উদ্ধারকালে চোর চক্রের সদস্য সাইমুন হাওলাদার নামে একজনকে আটক করা হয়।
তখন সাইমুন হাওলাদার জানান, মোটরসাইকেলটি সাদ্দাম মোল্লা ও মাসুম মুন্সী তার কাছে রেখেছে বিক্রির জন্য। পরে সাইমুনের বিবরণ ও তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই আবুল কাশেম বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্বভার জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই এস এ এম ফরহাদ রাহী মীরের ওপর দেওয়া হলে তিনি ঘটনা তদন্ত করে গত ২৯ জুন আদালতে চার্জশিট দেন।
মামলার চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, তদন্তকালে ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ও জনশ্রুতিতে প্রকাশ পায় যে, মামলার দুই নম্বর আসামি সাদ্দাম মোল্লা (২৬)। অভ্যাসগতভাবে অজ্ঞাত ৩/৪ জন চোরের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল স্বল্প মূল্যে কিনে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ধারা- ৪১১/৪১৩ পেনাল কোড ১৮৬০ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হলো।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন, সাদ্দাম দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত পুরাতন মোটরসাইকেলের ব্যবসা করে। আমিও একটা ইয়ামাহা বাইক কিনেছিলাম ডিজিটাল নম্বর প্লেট সহ। কাগজ আছে বলেছে। কয়েকদিন পর কাগজ দেওয়ার কথা থাকলেও বাইকের কাগজ নিয়ে অস্পষ্ট কথা বলতে থাকে। হঠাৎ একদিন দেখি, আমার বাইকের পেছনে থাকা ডিজিটাল নম্বর প্লেটটি নেই। তখন তার কাছে আমি জোর দিয়ে বাইকের কাগজ চাইলে তিনি আমাকে বলেন শিবচর মাদারীপুরে আমিই কাগজ। কোনও কাগজ দরকার নেই। এ নিয়ে বৈঠক পর্যন্ত হয়েছে। পরে জানতে পারি, বাইকটি মূলত কাগজবিহীন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আরেকজন বলেন, সাদ্দাম আমাকে বললো একটি ভালো মোটরসাইকেল বিক্রয় হবে মাত্র দেড় লাখ টাকায়। ডিজিটাল প্লেটসহ অল কম্পিলিট। আমি নগদ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনলাম। কয়দিন পর শুনি, এটার কাগজ নাই। ওর কাছে কাগজ চাইলাম। ও আমরে লামছাম বলে। এমন শত শত মোটরসাইকেল নাকি ওর নামের ওপর চলে, কাগজ লাগে না। এখন সেই মোটরসাইকেল নিয়ে বিপদে আছি।
এ বিষয়ে সাদ্দাম মোল্লা বলেন, আদালতে চার্জশিট দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না।
এই বিষয়ে শিবচর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ হোসেন মাদবর বলেন, বিষয়টি জানি, শুনেছি আমরা। সে যেই গাড়িটি বিক্রি করছে সে গাড়িটি (মোটরসাইকেল) আসলে চোরাই। গাড়িটি যার কাছে বিক্রি করছে তাকেও নাকি পুলিশ ধরছে এবং সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে তার কাছ (সাদ্দাম মোল্লার) থেকে কিনেছে। পরে পুলিশ তাকে খুঁজতে গিয়েছিল কিন্তু পায়নি। আমরা যতটুকু জানি সে জড়িত। যদি প্রমাণিত হয় সে এটার সঙ্গে জড়িত, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।
জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ পরিদর্শক এস এ এম ফরহাদ রাহী মীর চার্জশিট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।