সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে আদালত চত্ত্বরে কাজী পরিচয়ে ভূয়া বালাম বহিতে বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষানবীশ আইনজীবির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মো: সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি।
অভিযুক্ত ভূয়া কাজী মো: আহসান লিটন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের গুজুরি চর এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষানবিস আইনজীবী মোঃ আহসান লিটন মানিকগঞ্জ কোর্ট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভূয়া রেজিস্ট্রার বালাম বহিতে অবৈধভাবে বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি করে আসছেন। তিনি জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের চেম্বারে ভিজিটিং কার্ড সরবরাহ করে নিজেকে সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী পরিচয় দিয়ে আসছেন। তিনি দীর্ঘ ৬/৭ বছর যাবৎ ভূয়া কাজী হিসেবে মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাল্যবিবাহ রেজিস্ট্রি করে আসছেন। ভূয়া রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ পরিচালনা করে সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন।
আহসান লিটন অবৈধভাবে ১৩/১৪ বছরের মেয়েদের বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনী। গত ১৬ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখে বর- আহাম্মদ উল্লাহ, পিতা- মোঃ আমির আলী, দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ, যাহার জন্ম তারিখ ২০-০৮-২০০৮ইং ও কনে- মুমেনা, পিতা- আব্দুল বাতেন, দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ, মুমিনার জন্ম তারিখ ০২-০৫-২০০৯ইং, এদের বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন। যাহার বালাম নাম্বার ৪/২৩, পৃষ্টা ২৮। ভূয়া কাজী মোঃ আহসান লিটন সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত কাজীদের সিলমোহর ও স্বাক্ষর জাল করিয়া কাবিননামার সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করেন। তার এমন অপকর্মের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ও কাজীদের সম্মান ক্ষুন্ন হইতেছে এবং সহজ সরল মানুষ প্রতারণার শিকার হইতেছে।
ভূয়া কাজী আহসান লিটনের সরবরাহকৃত সত্যায়িত কাবিননামায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল ইসলামের সীল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আহসান লিটন নামে আমার কোন সহকারী নেই। তাকে আমি কোন বালাম বহিও দেইনি। আমার সীল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে কেউ প্রতারণা করলে আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।
এ নিয়ে অভিযুক্ত ভূয়া কাজী মো: আহসান লিটনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কাজীর কাজ করিনা। আমি একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবি। আমাদের কাছে দুয়েকটা বিয়ের কাজ আসলে বিভিন্ন কাজীদের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করি।
এ বিষয়ে জেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: ইশার আলী বলেন, নিকাহ রেজিস্ট্রার না হয়েও বিবাহ রেজিস্ট্রি করা একধরনের প্রতারণা। আর বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি করা তো মহা অন্যায়। এরকম প্রতারকদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, আহসান লিটন নামের এক ব্যক্তিকে ভূয়া কাজী উল্লেখ করা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।