সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : বাংলাদেশে পুতুল নাচের ঐতিহ্য অনেক প্রাচীন। কিন্তু কালের বিবর্তনে পুতুল নাচের জৌলুস এখন আর আগের মতো নেই। সারা বাংলায় এই ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে।
মঙ্গলবার (২৬শে মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হরিরামপুর উপজেলা প্রসাশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। যা মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই পুতুল নাচে অংশগ্রহণ করে। শিশু শিক্ষার্থীরা পায়ের আঙুলের সঙ্গে হাতে সুতো বেঁধে, মাথায় ঘুমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙালিয়ানা পোশাক পরিধান করে নাচ প্রদর্শন করে।
পুতুলের আদলে প্রায় ৩০ জন শিশু গানের তালে তালে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে। এই মনোমুগ্ধকর পুতুলের আদলে নাচের ভিডিও উপস্থিত অতিথি ও অভিভাবকদের মুগ্ধ করে, তাদের হৃদয় জয় করে।
সেই নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে সুধীজনরা প্রশংসা করছেন। অনেকেই বলছেন পুতুলের আদলে শিশুদের এই নাচ নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পুতুল নাচের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
নৃত্য অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক আগে থেকে প্র্যাক্টিস শুরু করি। আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যাডামদের সহযোগীতায় এই পুতুল নাচটি আমরা সুন্দর ভাবে নাচতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে অনুষ্ঠানে আসা মো. আকাশ নামের একজন বলেন, ছোট বেলায় পুতুল নাচ দেখতাম। সুতা দিয়ে পুতুল নাচানো হতো। তবে এখন আর পুতুল নাচ সেভাবে হয় না। এক সময় পুতুল নাচ দেশে ও বিদেশে বিখ্যাত ছিল। তবে কালের আবর্তে পুতুল নাচের আগের জৌলুস আর নেই। আজকের এই পুতুল নাচের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মও হারানো ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হতে পারবে।
পুতুলের আদলে শিশুদের এ নৃত্যের ব্যাপারে আন্ধারমানিক মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, আসলে পুতুল নাচটা আমাদের ঐতিহ্য। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এই পুতুল নাচ আমাদের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল। আমরা যখন মেলায় যেতাম তখন এই পুতুল নাচ না দেখলে আমাদের মেলা দেখা সার্থক হতোনা। এই ঐতিহ্যগুলো এখন আর গ্রাম-বাংলায় নেই।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য আমার দুই সহকর্মী শুভ্রা রায় এবং সামসুন্নাহার আজকের এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের দিয়ে আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছেন। আমি যখন শুনলাম তারা এটি করবে তখন বললাম এটা খুবই ভালো আইডিয়া। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হারানো ঐতিহ্যকে যেন বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে পারি সেজন্যই আমাদের এই প্রচষ্টা। আমার বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন মেয়ে শিক্ষার্থী এই পুতুল নাচে অংশগ্রহণ করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।