জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সপ্তাহখানেক আগেও বাজারে কাঁচা মরিচ কেনা যেত ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহজুড়ে টানা বৃষ্টির মধ্যে বাড়তে থাকে মরিচের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে সরবরাহের ঘাটতি থাকায় বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচা মরিচের এমন দাম বৃদ্ধিতে হতাশ ক্রেতারা। কাঁচা মরিচের এত দাম যেন মানতেই পারছেন না ক্রেতারা। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির প্রতি পিস ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।
সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মেছুয়া বাজার, পৌর মাকের্ট ও দুপুরে গৌরীপুর শহরের কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতারা এসব তথ্য জানান।
পৌর মার্কেটে সকালে সবজি কিনতে আসা অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা মো: সদর আলী জানান, শুধু মরিচ আর ডিম নয়, বাজারে অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
সবজি ক্রেতা তোফাজ্জল হোসেন অপু জানান, বর্তমানে বাজারে আমদানি করা ও দেশীয়- উভয় ধরনের কাঁচা মরিচই বিক্রি হচ্ছে। গরম, বন্যা বা অতিবৃষ্টির কারণে গত তিন-চার মাসে বাজারে বেশ কয়েকবার কাঁচা মরিচের দাম ওঠানামা করেছে। তবে বেশিভাগ সময় ২৫০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে মরিচ বিক্রি হয়েছে। তবে গত সপ্তাহে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা দরে মরিচ বিক্রি হয়েছে। এরপর ক্রমাগত দাম বাড়তে থাকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে ৬০০ টাকায় পৌঁছায়।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, শীত এখনো আসেনি, তবে বাজারে চলে এসেছে শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মূলাসহ প্রায় সব ধরনের শীতের সবজি। নতুন সবজির প্রতি ক্রেতাদের বাড়তি আকর্ষণ থাকলেও আকাশছোঁয়া দামের ফলে ধারে-কাছেও যেতে পারছে না মধ্য-নিন্মবিত্ত শ্রেণির মানুষ। বাজারে সব ধরনের সবজির দামও বেড়েছে। বেশিভাগ সবজি ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে বরবটি বিক্রি হতো ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এখন বাজার ভেদে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। বেগুনের দাম কেজি প্রতি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। টমেটো, পটোল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, করলা, ঢ্যাঁড়স, লাউসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।
বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম এখনো চড়া। ডিমের আড়ৎগুলোয় এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা দরে। পাড়া-মহল্লায় এই দাম ১৯০ টাকা বা তারও বেশি।
বাজারে ব্রলার মুরগির দামও দ্বিশতক ছুঁয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে। সাত দিন আগেও এর দাম প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল। সোনালি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে।
সকালে পৌর বাজারে সবজি কিনতে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো: হয়রত আলী। তিনি দোকান থেকে সাত ধরনের সবজি কেনেন। মোট ব্যয় হয় ৯১০ টাকা। অথচ ১৫ দিন আগেও এসব সবজি ৫০০ টাকার মধ্যে কেনা যেত বলে দাবি তার। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজি কিনতে গিয়ে ৪০০ টাকার মতো বেশি লাগছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’
বাজার করতে আসা রিকশাচালক সবুজ মিয়া বলেন, ‘দিনে আয় করি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বৃষ্টির কারণে সেই আয় কমে গেছে। আমার সারাদিনের আয় দিনে এক কেজি কাঁচা মরিচের দামও হচ্ছে না।’
এনজিওকর্মী ঝরনা সুলতানা বলেন, ‘মরিচের বাজারে আগুন। তাই আজ মরিচ কিনিনি। দাম কমার আগ পর্যন্ত কাঁচা মরিচ কিনব না।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।