জুমবাংলা ডেস্ক : বিশ্ববাজারে ২০২৩ সালে সোনার দাম রেকর্ড বৃদ্ধির পরও স্বর্ণালংকারের চাহিদা কমেনি এশিয়ায়; বরং আগের চেয়ে বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোতে স্বর্ণালংকারের বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনার দাম বাড়ার পরও মানুষ যে হারে স্বর্ণালংকার কিনছে তা রীতিমতো বিস্ময়কর। দাম বাড়ার পরও ২০২৩ সালে মোট ১৩১ বিলিয়ন ডলারের সোনা বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর-এই ৪ মাসে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণালংকার বিক্রি হয়েছে চীনে। দেশটিতে ৪ মাসে ১৪৮ টন সোনা বিক্রি হয়েছে, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদন অনুসারে, স্বর্ণালংকার কিনে রাখাকে লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে দেখছে মানুষ। বিশেষ করে করোনা-পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি আরো বেড়েছে। চারদিকে মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার অবনমনের কারণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হিসেবে তারা স্বর্ণালংকারকে রাখছেন তালিকার ১ নম্বরে।
স্বর্ণালংকার কেনায় চীনের সঙ্গে গত বছর হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে ছিল ভারত। ২০২৩ সালে চীনের জনগণ মোট ৬৩০ দশমিক ২০ টন সোনা কিনেছেন। এদিকে একই বছর ভারতীয়দের সোনা কেনার পরিমাণ ৫৬২ দশমিক ৩২ টন।
মূলত বছরের শেষ ৪ মাসে ভারতে স্বর্ণালংকার কেনায় কিছুটা ভাটা পড়ায় দেশটি চীনের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে। অক্টোবরের নবরাত্রি ও নভেম্বরের দিওয়ালিতে দেশটির বাজারে ভালো পরিমাণ সোনা বিক্রি হলেও বছরের শেষ মাস হিসেবে ডিসেম্বরে সোনা বিক্রির পরিমাণ কমে আসে। এদিকে নতুন বছর সামনে রেখে চীনে ডিসেম্বরে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে গেলে দেশটি বছর শেষে ভারতকে টেক্কা দিয়ে এখন স্বর্ণালংকার কেনার তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে।
চীন-ভারতে স্বর্ণালংকারের চাহিদা বরাবর বেশি হলেও এ তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে তুরস্কের নাম। স্বর্ণালংকার কেনায় এগিয়ে থাকা দেশটিতে দিনদিন সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে দেশটিতে মোট স্বর্ণালংকার বিক্রি হয়েছে ৩৬ দশমিক ৮৬ টন, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ৪১ দশমিক ৯৫ টন।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোতে স্বর্ণালংকারের চাহিদা আগের তুলনায় কমে এসেছে। ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১৪৩ দশমিক ৮০ টন সোনা বিক্রি হলেও ২০২৩ সালে তা ৫ শতাংশ কমে ১৩৬ টনে নেমে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতোই সোনা কেনায় পিছিয়ে আছে গোটা ইউরোপ। বছরজুড়ে ইউরোপে মাত্র ৭০ টন স্বর্ণালংকার বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ কম। এছাড়া ২০২৩ সালের শেষ চার মাসে ৩০ টন স্বর্ণালংকার বিক্রি করেছে ইউরোপের দেশগুলো, যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম।
অন্যদিকে শুধু চীন-ভারত না, এশিয়ার বাজারে সোনা কেনার তালিকায় এবার জাপানের নামও উঠে এসেছে। দেশটিতে এ বছর ১৬ টন স্বর্ণালংকার বিক্রি হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যানুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বছরান্তে স্বর্ণালংকারের চাহিদা গত এক দশকের হিসাবে বেড়ে ১৫ টনে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) বলছে, দেশে ৪০ হাজার সোনার দোকান আছে। মূলত নানা উৎসবে বাঙালির সোনার প্রতি চাহিদার ওপর ভিত্তি করে দোকানের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।