আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-চীন সীমান্ত। গত বছরের অক্টোবর মাসেই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে চুক্তি হয় দুদেশের। ডেমচক ও দেপসাংয়ের মতো একাধিক এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেয় উভয় পক্ষ।
কিন্তু সীমান্ত পরিস্থিতি যে শান্ত হয়নি এবার তার প্রমাণ মিলল চীনের নতুন পদক্ষেপে। সেই লাদাখ ভূখণ্ড নিয়ে নতুন দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরির ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া গত সপ্তাহে (২৭ ডিসেম্বর) জানায়, চীনের উত্তর-পশ্চিমের জিনজিয়াং উইঘুর অটোনোমাস রিজিয়ন সরকার নতুন দুটি কাউন্টি বা প্রশাসনিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। অঞ্চল দুটির নাম যথাক্রমে হেয়ান কাউন্টি ও হেকাং কাউন্টি।
সিনহুয়া আরও জানায়, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য পরিষদ এরই মধ্যে নতুন কাউন্টি দুটির অনুমোদন দিয়েছে। নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল দুটি চীনের হোতান প্রিফেকচারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
কিন্তু এই অঞ্চল দুটির বেশ কিছু অংশ ভারতের লাদাখে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশটির এই পদক্ষেপের ক্ষোভে ফুঁসছে নয়াদিল্লি। যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এই তথাকথিত কাউন্টির কিছু অংশ লাদাখের ভেতরে পড়ে এবং ভারত কখনই এই এলাকায় চীনের অবৈধ দখলদারিকে স্বীকৃতি দেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা হোটান প্রিফেকচারের অধীনে দুটি নতুন কাউন্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেখেছি। তথাকথিত এই কাউন্টিগুলোর কিছু অংশ ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখের ভেতরে পড়ে। আমরা কখনো এই এলাকায় চীনের অবৈধ দখলদারি স্বীকার করিনি।’
জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘নতুন কাউন্টি তৈরির বিষয়টি এই এলাকায় ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের ও ধারাবাহিক অবস্থানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। চীনের অবৈধ ও জোরপূর্বক দখলকে ভারত বৈধতা দেবে না। আমরা চীনা পক্ষের কাছে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
কয়েক বছর আগে সীমান্ত নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়। ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। লোহার রড ও কাঁটাতার জড়ানো হাতিয়ার নিয়ে হামলা চালায় চীনা সেনারা।
রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। ১৯৭৫ সালে পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির প্রথম ঘটনা ছিল এটা। সংঘর্ষের পরই সীমান্তে কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।