আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অস্ট্রেলীয় লেখক ইয়াং হেনজুনকে শর্তসাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বেইজিংয়ের একটি আদালত। সাজার শর্তের অর্থ হচ্ছে—আগামী দুই বছর ইয়াংয়ের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। আচরণ সন্তোষজনক হলে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাল্টে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। চীনে ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইয়াং। তার বিচার অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালে। সেখানে আইনজীবী নিয়োগের খুব বেশি সুযোগ তাকে দেওয়া হয়নি। চীনও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানায়নি যে, কোন দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ইয়াংকে দেওয়া সাজায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে ক্যানবেরা। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং সাংবাদিকদের বলেন, অস্ট্রেলীয় সরকার এই রায়ে হতবাক। ক্যানবেরা চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করাসহ জোরালো ভাষায় এর প্রতিক্রিয়া জানাবে।
পেনি ওং বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে অনিশ্চয়তার পর ডক্টর ইয়াং এবং তার পরিবার আজ যে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করছে, সেদিকটা তুলে ধরতে চাই আমি।’
৫৮ বছর বয়সী ব্লগার এবং গণতন্ত্রপন্থী কর্মী ইয়াং ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রীর সঙ্গে গুয়াংজু বিমানবন্দরে পৌঁছালে তখনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ‘দেশ ও জনগণের জন্য বিশেষ করে চীনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় লেখক ইয়াং এবং তার বন্ধু ও পরিবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। অস্ট্রেলিয়ার আগের সরকার এই লেখকের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছিল।
ইয়াং হেনজুনের সমর্থকেরা আজ সোমবার এই সাজার ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছে। ইয়াংয়ের বন্ধু এবং সহকর্মী ফেং চংয়ি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে বলেন, চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের মতো সার্বজনীন মূল্যবোধের পক্ষে কথা বলায় চীনা সরকার তাকে শাস্তি দিয়েছে।
তিনি অস্ট্রেলীয় সরকারকে ইয়াংয়ের চিকিৎসার জন্য প্যারোল চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাঁচ বছর আটক থাকার কারণে তার স্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফেং এর আগে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছিলেন যে, ইয়াং ১৪ বছর ধরে প্রাদেশিক পর্যায়ে চীনের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের (এমএসএস) হয়ে কাজ করেছেন। কাজের প্রতি হতাশ হয়ে এক সময়ে স্পাই উপন্যাস লিখতে শুরু করেন তিনি।
ইয়াং ২০০০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। এর পাঁচ বছর পর ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনিতে ফেং-এর অধীনে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখানে তিনি একজন উদারপন্থীতে পরিণত হন। চীনে আটকের সময় তিনি নিউইয়র্কে কর্মরত ছিলেন।
ইয়াংয়ের শাস্তির খবর নিশ্চিত করেছেন বেইজিংয়ের আরেক মানবাধিকার আইনজীবী। মামলাটি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই আইনজীবী বলেন, সমস্ত অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ইয়াং।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।