আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরের শেষ নাগাদ জাপানকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গাড়ি রফতানিকারক দেশ হয়ে উঠতে চলেছে চীন। ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিকসের বরাতে এমন তথ্যই জানিয়েছে সিএনবিসি।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মুডি’স জানিয়েছে, অতিমারি করোনাকালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি রফতানিকারক হয়ে ওঠে। দেশটি ২০২১ সালে সালে দক্ষিণ কোরিয়াকে এবং ২০২২ সালে জার্মানিকে ছাপিয়ে যায়।
এখন চীন বিশ্বের বৃহৎ গাড়ি রফতানিকারক জাপানকে টপকে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) প্রতি মাসে দুই দেশের গাড়ি রফতানির মধ্য পার্থক্য ছিল গড়ে প্রায় ৭০ হাজার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার।
চীন যদি এমন গতিতে এগোতে থাকে, তাহলে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ দেশটি জাপানকে ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করেন মুডি’স অর্থনীতিবিদরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বের শীর্ষ গাড়ি রফতানিকারকের স্থানটি জাপানের দখলে ছিল।
চীন প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার কারণ কী?
মূলত বৈদ্যুতিক যানবাহনের (ইভি) ক্রমবর্ধমান চাহিদাই চীনের গাড়ি রফতানি সামগ্রিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ভূমিকা রেখেছে।
২০২৩ সালের প্রথমার্ধে গত বছরের একই সমকয়ের তুলনায় দ্বিগুণ বৈদ্যুতি গাড়ি রফতানি করেছে চীন। যেখানে জাপান ও থাইল্যান্ডের সামগ্রিক যানবাহন (প্রথাগত যানবাহন ও বৈদ্যুতিক গাড়ি উভয় রয়েছে) রফতানি এখনও প্রাক-মহামারির স্তরেই ফিরে আসতে পারেনি।
অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনের এগিয়ে থাকার মূলে রয়েছে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সেল। মুডি’স জানিয়েছে, চীন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সেল উৎপাদন করে থাকে। দেশটির গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন খরচের ক্ষেত্রে যার একটি সুবিধা পায়।
মুডি’স বলছে, প্রতিদ্বন্দ্বী জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় কম শ্রম ব্যয়ের কারণে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি লিথিয়াম সরবরাহ করে থাকে চীন। পাশাপাশি বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি ধাতুর পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে দেশটির।
ফলে টেসলা ও বিএমডব্লিউর মতো বিশ্বের বড় বড় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চীনে তাদের কারখানা স্থাপন করেছে। যদিও বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো এখনও দেশটির স্থানীয় ব্র্যান্ড চেরি ও এসএআইসি’কে ছাপিয়ে যায়নি।
কাজেই অটোমোবাইল শিল্পে চীন যে গতিতে নতুন প্রযুক্তির সংযোজন করেছে, তা অতুলনীয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
গত বছর বিশ্বব্যাপী যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রির প্রায় ৩০ শতাংশই ছিল বৈদ্যুতিক গাড়ি। যদিও এটি করোনা অতিমারির আগের সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম।
চলতি বছরের এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি জানিয়েছিল, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী ১০ মিলিয়নেরও বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। যার প্রায় ৬০ শতাংশই সরবরাহ করেছিল চীন।
তা ছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ার ক্ষেত্রে চীনের গাড়ি নির্মাতাদের বড় আকারের মূল্য হ্রাস ও সরকারের নেয়া পদক্ষেপের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে মুডি’স।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।