আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আমাদের দেশে নদী এলাকাগুলোতে সচারাচরই চোখে পড়ে পালতোলা নৌকার। স্রোতের অনুকূলে বাতাসের সাহায্যে চলে এগুলো। এবার চীন পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে জাহাজেই লাগিয়ে বসলো বিশালাকৃতির পালের মতই আধুনিক প্রযুক্তি। যার ফলে চাইনিজদের তৈরি ‘ব্র্যান্ডশহ্যাচ’ নামক সেই জাহাজটি জ্বালানি ছাড়াই স্রোতের অনূকুলে পৌঁছে যাচ্ছে আপন গন্তব্যে। এতে সাশ্রয় হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার জ্বালানি।
ডিজেল চালিত বিশাল ইঞ্জিনের গতাণুগতিক ব্যবহার কমিয়ে চীনের পরিবেশ বান্ধব জাহাজটি ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী সব দেশগুলোর। ২৫০ মিটার দীর্ঘ ও ৪৪ মিটার প্রস্থের এই জাহাজটি দেখলে মনে হবে ভাসমান কোনো ভবন! যা কয়েকটি ফুটবল মাঠের সমান। এর সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো, এতে রয়েছে তিনটি ৪০ মিটারের বেশি উঁচু ‘স্মার্ট-সেইল’ যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতাসের গতিপথ বুঝে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে, যা জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেয়।আর প্রতিকূলে চলার সময় ইঞ্জিনের জ্বালানি ব্যবহার করে এটি পৌঁছে যায় গন্তব্যে।
ব্র্যান্ডশহ্যাচ প্রতিবার যাত্রায় পরিবহন করতে পারবে প্রায় ৮ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল। কিন্তু বিস্ময় এখানেই শেষ নয় এর বায়ু-সহায়ক প্রযুক্তি দৈনিক জ্বালানির ব্যবহার প্রায় ১৪.৫ টন কমিয়ে আনছে। বার্ষিকভাবে এতে প্রায় ৫,০০০ টন কার্বন নিঃসরণ কম হবে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এক বিশাল অগ্রগতি। এতে প্রতি বছর এই জাহাজ ব্যবহারে চীনের সাশ্রয় হবে প্রায় দেড়’শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৪’শ ২ কোটি টাকা।
গত ১৬ জুন থেকে ইউরোপীয় সমুদ্রপথে চলাচল শুরু করছে ‘ব্র্যান্ডশহ্যাচ’। চীনের এই প্রযুক্তি-অর্জন বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ শিল্পে এক নতুন পথ দেখাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চাইনিজ গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে বিশাল এই জাহাজ নির্মাণে ব্যায় হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ১২ হাজার ৭’শ কোটি টাকার মত।
বাতাসের শক্তিতে ছুটে চলবে জাহাজ, যা এক সময় দিবাস্বপ্ন মনে হতো, চীনের প্রকৌশল দক্ষতায় আজ সেটিই বাস্তবে রূপ নিয়েছে। জ্বালানিভিত্তিক শক্তির বিকল্প খুঁজতে গিয়ে যেখানে বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে চীনের এই প্রচেষ্টা দেখিয়ে দিল বাতাসই হতে পারে আগামীর জাহাজচালনার মূল শক্তি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।