জুমবাংলা ডেস্ক : বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। দেশের বৃহত্তম এই সেতুতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। কোটি মানুষের স্বপ্নের এই সেতু চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। শুধু তাই নয়, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তবে বেশি সুবিধা পাবে দেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ৬ কোটি মানুষ। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে এসব জেলা।
জাতির এই মহান অর্জনউদযাপনে সময় টেলিভিশনের বিশেষ আয়োজন ‘স্বপ্নযাত্রা’ নিয়ে আমরা এসেছি পদ্মা সেতুর সরাসরি সুবিধাভোগী এই ২১ জেলায়। এ আয়োজনে আজ থাকছে সাতক্ষীরার মানুষের কথা।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে কৃষিতে সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা। চিংড়ি উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জেলায় অন্যান্য মাছও প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যাটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। এই জেলায় রয়েছে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম ভোমরা স্থলবন্দর। এসব সম্ভাবনা ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সাতক্ষীরাবাসী।
শহরের কামাল নগরীর বাসিন্দা মাহমুদ হাসান বলেন, ‘পদ্মা সেতুর স্বপ্ন আমাদের অনেক দিনের। আমার জেলাবাসী খুবই খুশি, আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। এই সেতুর ফলে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। আমরা দ্রুত ঢাকায় যেতে পারব। এছাড়া জেলার চিংড়ি শিল্প, কৃষি ও পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে।’
গণমাধ্যমকর্মী কল্যাণ ব্যানার্জি বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে এই জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। অর্থনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব কমবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী জি এম শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। এতে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।
পরিবহন ব্যবসায়ী নূরুল হক বলেন, ‘সেতু চালু হলে আমাদের বাসগুলো দ্রুত সময়ে ঢাকায় যেতে পাবরে। আবার দ্রুত ফিরেও আসতে পারবে। বেশি ট্রিপ হলে আমাদের লাভও বেশি হবে।’ পদ্মা সেতু চালু হলে টোলের কারণে ভাড়া না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
চিংড়ি চাষি মোস্তাফিজুর রহমান ছোট বলেন, ‘চিংড়ি একটি পচনশীল পণ্য। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি পরিবহন করতে হয়। ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে পণ্যের উপযুক্ত দাম পাওয়া যায় না। অনেক সময় আমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এতে আমার চিংড়ি চাষিরাসহ জেলার সব পেশার মানুষ উপকৃত হবে।’
সাতক্ষীরা চিংড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে সাতক্ষীরার চিংড়ি শিল্পের বাজার সম্প্রসারণ হবে। চিংড়ির গুণগত মান ঠিক রেখে বিদেশে রফতানি করা যাবে। এতে জেলার তো অবশ্যই, দেশেরও সার্বিক উন্নতি হবে।’
ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০০ পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এখানে আমদানি-রফতানির সঙ্গে পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী যুক্ত রয়েছেন। কর্মরত রয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। এই বন্দর থেকে বছরে রাজস্ব আদায় হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। পদ্মা সেতু চালু হলে এই বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে কয়েক গুণ। নতুন নতুন ব্যবসায়ী আমদানি-রফতানিতে যুক্ত হবেন। কর্মসংস্থান বাড়বে। মানুষ সহজে ভারতে যেতে পারবে। রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।’
সূত্র : সময় সংবাদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।