জুমবাংলা ডেস্ক : বন্দর নগরী চট্টগ্রামে এই প্রথম পে-পার্কিং চালু করতে যাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে আগামী মার্চ থেকে নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় এ পে-পার্কিং শুরু হবে। প্রথমদিকে এই পার্কিংয়ের আওতায় থাকবে শতাধিক গাড়ি। পরবর্তীতে এ সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পরবর্তীতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও পে-পার্কিং চালু করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন, ট্রাফিক বিভাগ ও কারিগরি আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।
চসিক সূত্র জানায়, নগরীর পার্কিং নৈরাজ্য ও যানজট কমাতে দীর্ঘদিন ধরে পে-পার্কিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে চসিক। কিন্তু ট্রাফিক বিভাগের আপত্তি থাকায় এতদিন এ নিয়ে আগাতে পারেনি সংস্থাটি। সম্প্রতি ট্রাফিক বিভাগের সম্মতি পেয়ে পে-পার্কিংয়ের জন্য আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাকে নির্ধারণ করেছে চসিক। এ জায়গায় পে-পার্কিং করার ব্যাপারে একমত হয়েছে ট্রাফিক বিভাগও। সম্প্রতি এ জায়গায় সার্ভের কাজও শেষ হয়েছে। সেখানে ১৯০টি গাড়ি পার্কিং করতে পারবে বলে জানান সার্ভের কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি। তবে আপাতত একশটির মত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করবে চসিক। অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে গাড়ি পার্কিং করতে পারবে। তবে পার্কিং বাবদ ঘণ্টা হিসেব করে টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রতি ঘণ্টার জন্য কি পরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
আরো জানা যায়, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর সংলগ্ন সড়ক এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মূল সড়ক বাদে বাকি ফিডার রোড উপসড়কে পে-পার্কিং করা হবে। প্রথম ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর সফলতা আসলে নগরীর অন্যান্য এলাকাও পে-পার্কিং চালু করবে চসিক। পে-পার্কিংয়ের বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের কোন আপত্তি রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পে-পার্কিং করা হচ্ছে। সিএমপি এবং সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে এ কাজ করবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু পর্যবেক্ষণ ছিল, আমরা তা সিটি কর্পোরেশনকে জানিয়েছি। আমাদের পর্যবেক্ষণ আমলে নিয়ে পাইলটিং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাসহ নগরীর বেশকিছু এলাকায় এমনিতেই সড়কের একাংশ দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রাখে। যার যেদিকে এবং যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই পার্কিং করে রাখার ফলে সড়কের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তাই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত ভালো উদ্যোগ। এতে কিছুটা হলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
তিনি আরো বলেন, নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন নতুন নতুন বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে, কিন্তু এসব ভবনের পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। বহুতল ভবনের পার্কিং নিশ্চিত করতে পারছে না চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া, বাণিজ্যিকভাবেও আমাদের পার্কিংয়ের জায়গা নেই। তাই আপাতত সিটি কর্পোরেশনের এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও নগরবাসীকে স্বস্তি দিবে বলে মনে করছি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ট্রাফিক বিভাগকে সাথে নিয়ে আগামী মাস থেকে পে-পার্কিং চালু করা হবে। প্রথমে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পে-পার্কিং নিশ্চিত করা হবে। পরবর্তীতে আমরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পে-পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করবো। এতে নগরীর যানজট হ্রাসের পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে।
এদিকে, অবৈধ দখলে থাকা ফুটপাত উদ্ধার এবং নগরীতে যানবাহনের শৃঙ্খলা আনতে পে-পার্কিং চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গত ৩০ জানুয়ারি নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চসিকের ৩৬তম সাধারণ সভায় মেয়র এ ঘোষণা দেন।
এর আগের চসিকের সাধারণ সভায় নগরীর সড়কের ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা ও যানজটের কারণে জনদুর্ভোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চসিকের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। জনদুর্ভোগ লাঘবের উদ্যোগ নিতে কাউন্সিলররা মেয়রকে অনুরোধ জানান। এর প্রেক্ষিতে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা ২ অক্টোবর মেয়রের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ওই বৈঠকে মেয়র সিএমপি কর্মকর্তাদের একটি প্রস্তাব দিতে বলেন যাতে করে চসিক এবং সিএমপি একটি ভালো ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।