জুমবাংলা ডেস্ক : অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় হরহামেশাই ঘটে। এবার বিদ্যুতের মিটার চুরি করে টাকার বিনিময়ে তা ফেরত দেওয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে। মানিকগঞ্জের সদর উপজেলায় এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তবে তিন-চার মাস ধরে মিটার চুরির ঘটনা ঘটে চললেও চোরদের শনাক্ত করা যায়নি। তাই আতঙ্কে রয়েছে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুরির পর চোরের দল মিটার বোর্ডে একটি মোবাইল নম্বর রেখে যায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করে তাদের দাবি করা টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করলে মিটার ফেরত দেওয়া হয়। চুরি যাওয়া মিটারের বদলে নতুন মিটারের সংযোগ নিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচের পাশাপাশি নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। মূলত ঝামেলা এড়াতেই চোরের প্রস্তাবে রাজি হন মিটার মালিকরা। আর চোরের দলও এই সুযোগটি নিয়ে থাকে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। তারা জানায়, চোরেরা হুমকি দিয়ে বলে বছরে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিলেই মিটার চুরি থেকে রক্ষা পাবে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের অদূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন হারুন শিকদারের সরিষা ভাঙানো তেলের মিল। মিলের দায়িত্বে আছেন বড় ভাই আলমাস শিকদার। তিনি জানান, গত ঈদের কয়েক দিন আগে সকালে মিল চালু করতে গিয়ে দেখেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। মিলঘরের বাইরের ওয়ালে সংযুক্ত মিটারটি নেই। এর বদলে মিটার বোর্ডে ঝোলানো রয়েছে একটা পলিথিনের প্যাকেটে মোড়ানো সাদা কাগজ।
কাগজে একটা মোবাইল নম্বর লেখা। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ওপর প্রান্ত থেকে মিটারের বদলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুই দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় দরাদরি করে অবশেষে ছয় হাজার টাকায় রফা হয়। সেই নম্বরে আলমাস শিকদার ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাগীর ব্রিজের পশ্চিমের একটি জঙ্গল থেকে মিটারটি উদ্ধার করা হয়।
একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার লৌখণ্ডা গ্রামের শুকুর আলীর সেচ প্রকল্পে। এ ঘটনায় তিনি সদর থানায় একটি জিডিও করেন। তিনি জানান, মিটার বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অনেক দরাদরি করে বিকাশের মাধ্যমে ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে তাদের নির্দেশ অনুযায়ী, ব্র্যাক অফিসের পেছনে জংলা জমি থেকে উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া মিটার।
ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিনের ভাই আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন মিটারে সংযোগ নিতে হলে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে।’
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ওবায়দুল্লা আল মামুন বলেন, ‘মিটার চুরির বিষয়টি লোকমুখে আমরা জানতে পেরেছি; কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।’ মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘বিদ্যুতের মিটার চুরির রহস্য উদঘাটনে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।