জুমবাংলা ডেস্ক : ইশরাক হোসেন সিটি করপোরেশনে তালা দিয়ে কর্মচারীদের কাজে বাধা এবং মেয়রের চেয়ারে বসে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ইশরাকের কার্যক্রম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও মনে করছেন উপদেষ্টা।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, আমি ব্যক্তিকেন্দ্রিক কিছু বলতে চাই না। প্রথমত হচ্ছে আমি মনে করি তিনিও আমাদের গণঅভ্যুত্থানের একজন অংশীদার। যে কারণে দেখবেন যে পুরা এক-দেড় মাসের ঘটনার মধ্যে আমার জায়গা থেকে স্পষ্ট করেছি, কিন্তু তাকে টার্গেট করে আমি কোনো কিছু বলিনি। কারণ এটা আমাকে আমার মন সায় দেয় না এ বিষয়ে কিছু বলি। আমরা আরও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ প্রত্যাশা করেছি আগে, এখনো করি।
তিনি বলেন, যেটা হয়েছে সিটি করপোরেশন তালাবদ্ধ করা, এটি সরকারি কাজে বাধা। অফিসারদের কাজ করতে বাধা দেওয়া এটাও একটা ক্রিমিনাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ) আমাদের প্রচলিত আইনে, মেয়রের চেয়ারে বসা- এ প্রত্যেকটি জিনিস আইনের চোখে অপরাধ।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের যে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক এই সম্পর্কটা যাতে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত ক্ষতিগ্রস্ত না করে। এটাই আমাদের প্রাইমারি ফোকাস। এই সম্পর্কটা সুন্দর রাখার জন্য সবার দায়িত্বশীল আচরণ করা জরুরি।
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ ছিল এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে পৌঁছানোর জন্য, সেটা যাতে ব্যাহত না হয়। সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও দায়িত্বশীল হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
গত এক-দেড় মাস ধরে ইশরাক হোসেনের বিষয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একার ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, পুরো বিষয়ে আমার একার সিদ্ধান্তের কিছু ছিল না।
প্রজেক্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যে আসিফ মাহমুদ ব্যক্তিগতভাবে… সেই সুযোগটা আমার নেই। আমরা উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়বদ্ধ। এই বিষয়গুলো যখন আসে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিবিধ অংশে এজেন্ডার বাইরে আলোচনা হয়, সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আছে আমি এখানে দায়িত্বে আছি, আমি সেটা কেরি ফরওয়ার্ড করি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, তিনি (ইশরাক হোসেন) ব্যক্তি হিসেবে কেন আমাকে আক্রমণ করছেন, সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। আমার মনে হয় এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এর কিছু প্রমাণও আমরা পেয়েছি। আমার জন্মস্থানের যে বিএনপির নেতা আছেন তিনি এটাকে নানাভাবে উসকানি দিচ্ছেন, বিভিন্ন লজিস্টিক সহায়তা করছেন।
আবার দেখা গেছে যখন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের একটা টেনশন ছিল, সেখানে একটা পলিটিক্যাল টুল হিসাবে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে। কেউ কেউ উষ্মা প্রকাশ করছিলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে বৈঠকের সময় পাচ্ছি না। সেখানকে সরকারকে চাপ দেওয়ার একটা টুল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা দেখেছি এটা কোন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। এটা যমুনার সামনে বিক্ষোভ অবরোধ থেকে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের পর্যায়ে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। বিষয়টাকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আমরা দ্বিতীয় বড় সংকট মোকাবিলা করেছি। যেটা আমরা আল্লাহর রহমতে উৎরে এসেছি।
ইশরাক হোসেন একজন আইডল। আমরা তার সাহসিক কার্যক্রম দেখেছি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে তাকে মিসগাইড করা হয়েছে, মিস লিড করা হয়েছে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চারিতার্থ করার জন্য, সেটা এখনো করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের আহ্বান থাকবে এই জায়গাগুলোতে আরও সতর্ক থাকার। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা…রাজনৈতিক দলগুলোই তো এই সরকারের অংশ।
এই সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই হয়েছে। প্রত্যেকটি দলের সঙ্গে কথা বলে বলে উপদেষ্টা পরিষদ ঠিক করা হয়েছে। আলোচনার ভিত্তিতে যেহেতু সবকিছু হচ্ছে তবে এটা কেন নয়।
আসিফ মাহমুদ বলেন, এটা আলোচনার পর্যায়ে না আসা ও না আনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে আমি মনে করি।
আদালত ও নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালের রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের করণীয় বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই জানিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু বারবার বলা হচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ভঙ্গ করেছে, আমরা আইনের কিছুই বুঝি না।
তিনি আরও বলেন, একটা জায়গায় বলা হচ্ছে গেজেটের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে স্থানীয় সরকার বিভাগ শপথ না পড়ানোয় আইন ভঙ্গ হয়েছে। গেজেটের মেয়াদ বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শেষ হয়েছে, সেজন্য এই বিষয়ে আমাদের করণীয় কিছু ছিল না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।