সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৩ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলা যুবলীগের ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মোল্লা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য রজ্জব আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জনি। আহত জ্জব আলী ও মোঃ জনি হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ফরিদ মোল্লা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, হরিরামপুরে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন । অনুষ্ঠানে যুবলীগ – ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।দোয়া ও ইফতার মাহফিল শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের অনুসারীরা সাবেক এমপি মমতাজ বেগমের অনুসারীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করে । হামলায় গুরুতর আহত হয় মমতাজ বেগমের তিন অনুসারী। তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার শিকার যুবলীগ নেতা ফরিদ মোল্লা বলেন, হরিরামপুরের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে আমরা ইনভাইটেড ছিলাম। দোয়া শেষে ইফতার করে নামাজের উদ্দেশ্যে যখন বের হয়েছি তখনই উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুরের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র সহকারে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের হামলায় আমিসহ আরো কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছি। আগে আমরা দেওয়ান সাইদুরের কাজ করতাম। কিন্ত তার নানা অপকর্মের কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে তার পারপাস সার্ভ না করায় প্রতিহিংসামূলকভাবে আমাদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। দেওয়ান সাইদুরের ছেলে নবীনুর, এরশাদ, রানা, রফিক ও দেওয়ান মুরাদসহ বেশ কয়েকজন মিলে এ হামরা করেছে বলেও জানান তিনি।
ফরিদ মোল্লা আরো বলেন, ইতোপূর্বেও দেওয়ান সাইদুর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর অনেকবার হামলা করেছে। অদৃশ্য কারণে পুলিশ আমাদের সেই মামলাগুলোও নেয়নি। আমরা বিচারহীনতার মধ্যে আছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।
সংঘর্ষের প্রত্যক্ষদর্শী জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তামজিদ উল্লাহ প্রধান লিল্টু বলেন, বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন এলেই দেওয়ান সাইদুর রহমান বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি জনগণ ও নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখান। আজ তেমনই একটা ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। হামলায় আহত যুবলীগ নেতা ফরিদ মোল্লাসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে। তার এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। এসব সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এদিকে হামলার বিষয়েটি অস্বীকার করে দেওয়ান সাইদুরের ছেলে দেওয়ান নবীনুর বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। আমি ঢাকা গিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে এসেছি। এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। এ ঘটনায় হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, আমার লোকজনের বিরুদ্ধে পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ করেছে। তারা নিজেরা মারামারির করেছে। নিজেরা মারামারি করে আমার লোকজনের উপর দায় চাপাচ্ছে।
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ্ নূর এ আলম বলেন, ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। সেসময় আমরা কাছাকাছিই ছিলাম। সাথে সাথেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ঘটনায় এখনো কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।