জুমবাংলা ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির সম্মেলন বন্ধের দাবিতে একটি পক্ষের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ও পাল্টা-হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫৪ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় একটি মার্কেটের অন্তত ১০টি দোকানে অগ্নিসংযোগ এবং ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা সদরের প্রতাপগঞ্জ বাজারের মুসা মার্কেটের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক ভিপি এ কে মুসার ব্যক্তিগত কার্যালয়ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির বিবাদমান দুই পক্ষের একাধিক নেতা ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি নেতারা জানান, আগামী ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সাবেক এমপি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ খালেক এবং কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সম্মেলন বন্ধের দাবিতে এম এ খালেকের কর্মী-সমর্থকরা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুতের মোড় (মাতুর বাড়ির মোড়) থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। লাঠি, রামদা ও হাতুড়ি নিয়ে সহস্রাধিক লোক মিছিলটিতে অংশ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মিছিলটি স্থানীয় মুসা মার্কেট এলাকা অতিক্রমের সময় অপরপক্ষের কর্মী-সমর্থকরা আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরে তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালায়। সেই সময় উভয়পক্ষের লোকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫৪ জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে ৩৬ জনকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বর্মন জানান, এখন পর্যন্ত ৫৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. আব্দুল কাদের বলেন, দমকল বাহিনীর দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা হয়নি।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম বলেন, আগামী ২০ নভেম্বর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা আছেন।
সাবেক এমপি এম এ খালেক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে মুসা মার্কেটের সামনে দিয়ে আসামাত্র বিনা উসকানিতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কাউন্সিল বাতিলের দাবিতে মিছিল বের করেছিলাম। এই মিছিলে কৃষক দল নেতা মেহেদী হাসান পলাশের নির্দেশে তার পক্ষের লোকেরা হামলা করেছে।
অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাবেক ভিপি এ কে মুসার বক্তব্য জানতে তার নম্বরে একাধিকবার ফোন কলেও তিনি ধরেননি।
কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, আমি বাঞ্ছারামপুরে ছিলাম না, ঢাকায় অবস্থান করছি। তা ছাড়া আজকে আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমরা আগামী বুধবার অনুষ্ঠেয় বিএনপির সম্মেলনের পক্ষে। আমাদের নেতাকর্মীরা সম্মেলন সফল করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। অপরদিকে এম এ খালেকের লোকেরা বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত সম্মেলনকে বানচাল করার জন্য ১৪৪ ধারা জারির পরিবেশ সৃষ্টি করতে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক নিজেদের লোক দিয়েই ইট-পাটকেল মেরেছে এবং পরে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।