বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : কে না জানে যে, ২৪ ঘণ্টায় একদিন। দিন ও রাতের হিসাবকে সহজ করতে সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা ইত্যাদিতে গোটা দিনকে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি ভোর থেকে অন্য আরেকটি ভোরের দূরত্ব হিসেবে মোটাদাগে ২৪ ঘণ্টা সময়কে চিহ্নিত করা হয়। আর এই সময়ের পরিক্রমণটি ঠিক করা হয়েছে নিজ অক্ষের ওপর পৃথিবীর আবর্তনকে বিবেচনায় নিয়ে। কিন্তু এখন সেই আবর্তনের সময় নিয়ে শুরু হয়েছে গণ্ডগোল। কারণ—জলবায়ু পরিবর্তন।
বিজ্ঞান গবেষণার বিখ্যাত জার্নাল ‘নেচার’ সম্প্রতি এমনই একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে হারে বরফ গলছে, তার প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর গোটা জলভাগের ওপর। এতে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ভরের পরিবর্তন হচ্ছে, যার সরাসরি প্রভাব আছে পৃথিবীর ঘূর্ণনে। নিজ অক্ষের ওপর পৃথিবীর ঘূর্ণন স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হলেও সূর্যের চারদিকে এর আবর্তন কিছুটা ধীর হচ্ছে। এতেই বদলে যেতে পারে ঘড়ি।
নেচারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর ঘূর্ণনে যতটা পরিবর্তন হয়েছে, তাতে খুব শিগগিরই এক সেকেন্ড সময় কেটে নিতে হবে ঘড়িগুলো থেকে।
বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলে ঘড়ি ও সময়কে পরস্পরের অনুরূপ রাখতে যে ঘড়িটি অনুসরণ করা হয়, তা হলো—গ্লোবাল ইউনিভার্সেল টাইম সংক্ষেপে ইউটিসি। এই সময় পৃথিবীর ঘূর্ণনের ওপর নির্ভরশীল। পৃথিবীর ঘূর্ণন যেহেতু ধ্রুব কোনো বিষয় নয়, তাই দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যও সমান থাকে না।
গবেষণা বলছে, পৃথিবীর জলভাগ বেড়ে যাওয়ায় পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর কিছুটা দ্রুত ঘুরছে। এ কারণেই ঘড়িতে বদল আনার কথা বিবেচনা করছেন এখন বিজ্ঞানীরা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ লিপ সেকেন্ড যুক্ত হয়েছে পৃথিবীর ঘড়িতে। ২০২৬ সালে প্রথমবারের মতো এক সেকেন্ড কমানোর কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। একে বলা হচ্ছে নেগেটিভ লিপ সেকেন্ড।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, আরও ভালোভাবে বললে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে গ্রিনল্যান্ড ও অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে জলভাগ। ফলে ঘূর্ণন যাচ্ছে বেড়ে। ৩০ বছর আগের সাথে তুলনা করলে বরফ গলছে পাঁচগুণ বেশি হারে। ফলে ২০২৯ সালে আরও এক সেকেন্ড যুক্ত করতে হতে পারে ঘড়িতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।