জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতে বিভিন্ন ধরণের মশলার চাষ করা হয়। আর যেগুলির বাজারে চাহিদা এবং দামও থাকলে কার্যত আকাশছোঁয়া। যে কারণে ভারত “মশলার দেশ” হিসেবেও পরিচিত। প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন মশলার চাষের প্রচলন চলে আসছে ভারতে। যার মধ্যে অধিকাংশ মশলাই শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, পাশাপাশি তা স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। এমতাবস্থায়, বিগত কয়েক বছরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আধুনিক প্রযুক্তিতে মশলার চাষ শুরু হয়েছে। যেখানে কৃষকরা কম সময়ে বেশি লাভের সুযোগ পান।
বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক সেরকমই এক লাভজনক চাষের উপায় উপস্থাপিত করব। আমরা সবাই জানি যে, মশলার মধ্যে লবঙ্গ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত উপকারী মশলা হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, লবঙ্গ দিয়ে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধও তৈরি করা হয়। তাই এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি লবঙ্গ খেলে মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা যেমন দূর হয়, তেমনি এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী করে।
এমতাবস্থায় লবঙ্গ চাষ করলে খুব সহজেই ভালো অঙ্কের লাভ করা সম্ভব। এই ফসল ফলানোর জন্য সাধারণত বেলে মাটি ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি, সেচের জন্য খুব কম জলেরও প্রয়োজন হয় এই চাষে। লবঙ্গ গাছ একবার লাগানো হলে প্রায় ১০০ বছর বাঁচতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রে সঠিক যত্নের প্রয়োজন। লবঙ্গ গাছ ঠান্ডা বা আর্দ্র জলবায়ুতে ঠিকভাবে বাড়তে পারেনা। যে কারণে ২৫ ডিগ্রি থেকে ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেই এই চাষ সবচেয়ে ভালো হয়। এই চাষের প্রথমে বাজার থেকে লবঙ্গের বীজ কিনে এনে তা বপনের আগে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়।
এরপর ক্ষেতের মাটিতে জৈব সার মিশিয়ে তারপর ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে মাটিতে একটি গর্ত খুঁড়ে লবঙ্গের বীজ বপন করতে হয় কৃষকদের। পাশাপাশি, মাথায় রাখতে হবে যে সমস্ত বীজ যেন একটি লাইনে রোপণ করা থাকে। এরপরে, মাটিতে হালকাভাবে জল ছিটিয়ে দিয়ে নিয়মিত সেচের প্রক্রিয়াটি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
সাধারণত, লবঙ্গের বীজ অঙ্কুরিত হতে ১ থেকে ২ মাস সময় লাগে, এবং গাছগুলি ২ থেকে ৩ বছরে পরিপক্ক হয়। প্রায় ৫ বছর পরে লবঙ্গ গাছে ফুল চলে আসে এবং সেগুলির রং হালকা লাল বা গোলাপি হয়। সেগুলিকে গাছ থেকে তুলে রোদে শুকানো হয়। তারপর হাত দিয়ে ঘষলে উপরের চামড়া উঠে যায় এবং বাদামি লবঙ্গ পাওয়া গেলেও সেগুলি শুকনোর পর ওজন প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়।
ভারতীয় বাজারে লবঙ্গের চাহিদা যথেষ্ট বেশি, তাই লবঙ্গ চাষ নিশ্চিতভাবে লাভজনক চাষ। লবঙ্গ শুধু মশলা হিসেবেই ব্যবহার করা হয় না। পাশাপাশি, এটি টুথপেস্ট, ওষুধ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এমতাবস্থায় লবঙ্গ চাষের পর বাজারে লবঙ্গ বিক্রি করতে গেলে এর দাম প্রতি কেজিতে পাওয়া যায় প্রায় ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। এভাবে প্রতি মরশুমে ৫০ কেজি লবঙ্গ চাষ করলে তা থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যায়। অন্যদিকে টুথপেস্টসহ অন্যান্য পণ্য তৈরির জন্য কাঁচা লবঙ্গ কেনা-বেচা করা হয়। যার দামও বেশি এবং ওজনও শুকনো লবঙ্গের চেয়ে অনেকটাই বেশি থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।