জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রথম মেরিন পাইপলাইন প্রজেক্টের অংশ হিসেবে চীনের তৈরি বহুমুখী কাজ করতে সক্ষম এমন একটি সমুদ্রের তলদেশে খননকারী যন্ত্র (ট্রেঞ্চার) সম্প্রতি ১০০ কিলোমিটার পাইপলাইনের খনন কাজ চালিয়েছে। এর মাধ্যমে ‘সি ল্যান্ড ডিরেকশনাল ড্রিলিং’ ও ‘গভীর সমুদ্রতলদেশে খননকাজ (ডিপ-সি ট্রেঞ্চ)’-এ দুইটি বিশ্বরেকর্ড ভাঙল ওই যন্ত্রটি।
শনিবার (১১ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (সিএনপিসি)
গ্লোবাল টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কো (সিপিপি)-এর নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে ওই ট্রেঞ্চার যন্ত্রটি। সিপিপি তেল ও গ্যাস সংরক্ষণ ও স্থা্নান্তরের অবকাঠামো তৈরি করার একটি পেশাদার কোম্পানি।
দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে তেল ও গ্যাস পরিবহনের জন্য পাইপলাইন তৈরি করা হচ্ছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অন্যতম প্রধান প্রকল্প এটি। এ প্রকল্পের আওতায় ছয়টি ডিরেকশনাল ড্রিলিং ও ১১ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন কাজ করা হবে। সিপিপি’র তথ্যমতে মেরিন প্রকৌশলের দুনিয়ায় অন্যতম কঠিন প্রকল্প এটি।
ভূ-অভ্যন্তরে থাকা তেলের রিজার্ভে পোঁছানোর জন্য তেল উত্তোলন কোম্পানিগুলো ডিরেকশনাল ড্রিলিং পদ্ধতি ব্যবহার করে। অন্যদিকে ডিপ-সি ট্রেঞ্চ বলতে বোঝায় সমুদ্রের তলদেশে দীর্ঘ, সরু, ও খাড়া গর্ত তৈরি করা যা কমপক্ষে ৭৩০০ থেকে ১১০০০ মিটারের বেশি গভীর হয়।
অফশোর ইন্ডাস্ট্রিতে সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে দেড় থেকে তিন মিটার পর্যন্ত খনন করা হয়। এমনকি পাঁচ মিটার গভীরে পর্যন্ত গর্ত করা এ শিল্পে একটি কঠিন কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রযুক্তিগত বাধা কাটাতে নিজেদের উদ্ভাবনশক্তিকে কাজে লাগিয়েছে সিপিপি। এর মাধ্যমে ১১.৯ মিটার গভীর পর্যন্ত খনন কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের নাব্যতা কম হওয়ায় বড় জাহাজ থেকে সরাসরি জ্বালানি খালাস করা যায় না। ফলে ছোট জাহাজ দিয়ে বড় জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাস করে বন্দরে আনা হয়। নতুন এ পাইপলাইন তৈরি হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। তখন জাহাজ থেকে সরাসরি ইস্টার্ন রিফাইনারিতে জ্বালানি সরবরাহ করা যাবে।
‘ইনস্টলেশন অভ সিংগেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপালাইন’ শীর্ষক এ প্রকল্পের নির্মাণ ও কমিশনিং-এর জন্য ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সিপিপি’র সাথে এক সমঝোতায় পৌঁছে। এ প্রকল্পের অধীনে গভীর সমুদ্র থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে সরাসরি তেল পরিবহনের জন্য ২২০ কিলোমিটার ডাবল পাইপলাইন, ১৪৬ কিলোমিটার অফশোর পাইপলাইন, ও ৭৪ কিলোমিটার অনশোর পাইপলাইন তৈরি করা হবে।
প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হলে বছরে নয় মিলিয়ন টন জ্বালানি পরিবহন করা যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।