সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে বাবা ও সৎ মায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে ইভা আক্তার (২২) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
নিহত ইভা আক্তার মানিকগঞ্জ নার্সিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সে জেলার সদর উপজেলার কাটিগ্রাম ইমামনগর গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের মেয়ে।
মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর নিজ বসতঘরে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ ও মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ইসরাফিল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নিহত ইভা আক্তারের ছোট ভাই শুভ আহমেদ বলেন, আমার বাবা ইসরাফিল হোসেন সাত-আট মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই সে আমার মা, বোন এবং আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। গতকাল ঈদের দিন আমার বাবা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর আমার বাবা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে মা ডাকার জন্য আমাকে এবং আমার বোনকে চাপ দিতে থাকে। কিন্ত আমার বোন মা ডাকতে অস্বীকৃতি জানালে আমার বাবা ও সৎ মা দুজনে মিলে আমার বোনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। আমার বোনের চরিত্র নিয়েও বাজে মন্তব্য করে। একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে আমাকে এবং আমার বোনকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর আমাদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে। আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত না চাইলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
শুভ আহমেদ আরো বলেন, আমার বাবা এবং সৎ মায়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার বোন আজ সন্ধ্যার পর নিজের রুমে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে আটটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এর পর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত আনসার সদস্য শাবলু মিয়া বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক ওই মেয়েটির মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই তার বাবা ও চাচা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় মেয়েটির বাবা ইসরাফিল হোসেনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তবে মেয়েটির চাচা চান্দু মোল্লা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। মেয়েটির দাদি খোদেজা বেগমও পালিয়ে গেছে বলে শুনেছি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, শুনেছি পারিবারিক কলহের জেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।ঘটনার পর তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।