বিনোদন ডেস্ক : উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় তাকে দেখা গিয়েছিল মালা বিক্রি করতে। কোনো এক নেটপ্রেমীর ক্যামেরায় বন্দি হয়ে ভাইরাল হয়ে যায় তার দুটি আয়ত চোখ।
তারপর থেকে তার দুই চোখের পেছনে ছুটছে অগণিত ক্যামেরা। কুম্ভে ভাইরাল হওয়া মোনালিসা ভোঁসলের দুই চোখের মূল আকর্ষণ মণির রঙ। নীল নয়, সবুজও নয়, আবার ঠিক বাদামিও নয়। সোনালি রঙয়ের দুই মণিতে হলদেটে ভাবের ছোঁয়াই বেশি। এমন চোখ কেবল বিরল নয়, বিরলের মধ্যে বিরলতম।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের’ গবেষকেরা চোখের রঙ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই গবেষণা করছেন। গবেষণায় জানা গেছে, এমন রংয়ের চোখ বিশ্বে মাত্র ৫% মানুষেরই আছে।
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে মহাকুম্ভে (১৪৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়) মালা বিক্রির জন্য এসেছেন ১৭ বছর বয়সি মোনালিসা। উদ্দেশ্য একটাই পুণ্য তিথিতে মালা বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করা।
গবেষণায় জানা গেছে, মেলানিন রঞ্জকের কারণেই চোখের মণির রঙ বদলায়। এই মেলানিন তৈরি হয় মেলানোসাইটস নামের কোষ থেকে, যা থাকে চোখের মণিতে। মেলানিন যদি বেশি থাকে, তা হলে মণির রং হবে গাঢ় বাদামি। যদি মেলানিন কম থাকে, তা হলে মণির রঙ হবে হালকা। যে সব মানুষের চোখের রঙ হালকা, তাদের মেলানিন কম থাকে। ফলে বাইরের আলো সহজেই চোখ শুষে নেয়, তার পর তা প্রতিফলিত হয়। আর সে কারণেই চোখের রঙ হালকা মনে হয়।
মেলানিনেরও দুটি ভাগ রয়েছে—ইউমেলানিন ও ফিয়োমেলানিন। ইউমেলানিনের ভাগ বেশি হলে চোখের মণির রঙ হবে কালচে বাদামি। আর ফিয়োমেলানিনের মাত্রা বাড়লে মণির রং বদলে হবে লালচে হলুদ। এই ফিয়োমেলানিনের মাত্রার হেরফেরেই চোখের মণির রং হলদেটে সোনালি বা মেটে সোনালি হতে পারে।
তবে গবেষকেরা বলছেন, অ্যাম্বার রঙয়ের চোখ যদি হয়, তা হলে তাতে ইউমেলানিন ও ফিয়োমেলানিন দুই-ই থাকবে, কেবল তাদের মাত্রার হেরফের হবে।
এই ধরনের চোখে কিন্তু সবুজের কণামাত্রও থাকে না। পান্না-সবুজ চোখ অনেকেরই থাকে, তবে তার কারণ আলাদা। আবার সমুদ্রনীল চোখ নিয়ে যারা সৌন্দর্যপিয়াসিদের মুগ্ধ করেন, তাদের চোখের মণিতে কিন্তু মেলানিন থাকে না বললেই চলে।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, যাদের চোখ বাদামি, তাদের চোখে মাত্রাতিরিক্ত মেলানিন থাকে। ফলে বাইরের আলো কম প্রবেশ করে। আবার যাদের চোখ দেখে মনে হয় নীল, তাদের ক্ষেত্রে মেলানিন থাকে না বললেই চলে। ফলে বাইরের আলো শুষে নিতে পারে না, কিন্তু প্রতিফলন হয় অনেক বেশি।
মেলানিন কমবে না বাড়বে, তা নিয়ন্ত্রণ করে জিন। কার চোখের মণির রং কী হবে, তা নিয়ন্ত্রণ করে ওসিএ২ এবং এইচআরসি২ নামক দুই জিন। এর মধ্যে ওসিএ১ জিনের কারণেই চোখের মণিতে মেলানিনের হেরফের বেশি হয়। ফলে কারও চোখ বাদামি, কারও নীল আবার কারও মেটে সোনালি হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।