আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের প্রভাব পড়েছে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ে। যেসব প্রতিষ্ঠান ওই অঞ্চলে ব্যবসা পরিচালনা করছে, তারা আয়ের পূর্বাভাস কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। একদিকে পর্যটন খাতের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে ব্যাহত হয়েছে সরবরাহ চেইন। ফলে বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বৈশ্বিক নেতাদের সংঘাত বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশের পর কোম্পানিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ আরো গভীর হয়েছে।
চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তেল আবিবে ফ্লাইট বাতিল হওয়ার পরিমাণ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড এয়ারলাইনস। এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় পূর্বাভাসের নিচে নেমেছে। সামনের প্রান্তিকে তা গভীর হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্কট কিরবি বলেন, “বিদ্যমান সংঘাতের কারণে আমরা সাময়িকভাবে নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
ডেলটা এয়ারলাইনস ও আমেরিকান এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইটের সময়ে পরিবর্তন এনেছে। পরিবর্তন এসেছে আয়ের পূর্বাভাসে। বাণিজ্য নেতাদের মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে সংঘাত। উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং দাবি করেছে, সংঘাতের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।
চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) রয়েল ক্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের সক্ষমতার ১ দশমিক ৫ শতাংশের গন্তব্য ছিল ইসরায়েল। ইসরায়েলের নাগরিক ছাড়াও রয়েছে দর্শনার্থী। এর মধ্যেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে আয় নিয়ে। প্রতিষ্ঠানটি ‘র্যাপসোডি অব দ্য সি’ নামে একটি জাহাজ ফ্রি সেবা দিচ্ছে আটকে পড়া আমেরিকানদের ইসরায়েল থেকে বের করে নিতে। সবকিছু মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় কমবে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
যেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপননির্ভর, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ ব্যয় সংকুচিত করে ফেলায় প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে কোম্পানির আয়ে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্ন্যাপ দাবি করেছে, সংঘাতের কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে আয় নিম্নমুখী।
এদিকে মেটার অর্থনৈতিক প্রধান সুসান লি বলেছেন, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে বিজ্ঞাপন বাবদ আয় কমে এসেছে। সংঘাতের পর থেকে শুরু করে আয় কমে যাওয়ার প্রবণতাকে তিনি তুলনা করেছেন রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সময়ের সঙ্গে।
অ্যালাইন টেকনোলজির আয় কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জন মোরিসি। এওন ও ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস ওই অঞ্চলে নিযুক্ত কর্মীদের খবরাখবর নিচ্ছে। পরিবর্তন এসেছে কর্মঘণ্টায়। উভয় প্রতিষ্ঠানই আয় কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। ইসরায়েলকে উদ্যোক্তা বান্ধব হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু সংঘাতের কারণে মন্থরতা উঠে এসেছে তাদের বিকাশে।
অন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সার্ভিসনাউয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা উইলিয়াম ম্যাক ডেরমট জানান, “সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে তাদের কর্মী ছিল, যে মারা যান।”
তবে এ সংঘাত ঘিরে আয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রধান জ্যাসন অ্যাইকেন বলেন, “আগে মাসে ১৪ হাজার আর্টিলারি শেল তৈরি হতো। এখন আমরা মাসে এক লাখে উন্নীত করার জন্য কাজ করছি। ইসরায়েল সংঘাতের কারণে চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলেই আমরা মনে করছি।” সূত্র: সিএনবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।