জুমবাংলা ডেস্ক : শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার পরে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় শনিবার তাদের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ডে পাঠায়।
পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ২০১৯ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে শিপন আহম্মেদ ওরফে আরিফ। এরপর চাকরি না পেয়ে পরিবারের আর্থিক সংকট দূর করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে ইমো হ্যাকিং শিখে সৌদি আরব ও কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের টার্গেট করে। তাদের ইমো হ্যাক করে দেশে এবং বিদেশের নিকট আত্মীয় ও বন্ধুদের থেকে বিভিন্ন রকম সাহায্যের ম্যাসেজ দিয়ে টাকা আদায় করতেন।
এ কাজে সে তার খালাতো ভাই রাসেল আহম্মেদ ও একই এলাকার বন্ধু মজিবুল ইসলামকে তার সহযোগী করে নেন এবং ইমো হ্যাকিং শেখান। পরবর্তীতে তারা তিন জনই হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।
ইমো আইডি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা এই তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার পরে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় শনিবার তাদের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ডে পাঠায়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, নাসির উদ্দিন নামে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক গত ৩ জানুয়ারি দেখতে পান তার ইমো আইডি হ্যাক করে আর্জেন্ট ২০ হাজার টাকা লাগবে বলে তার আত্মীয়দের কাছে দুইটা বিকাশ নম্বর পাঠানো হয়েছে। তখন তার দুবাই প্রবাসী ভাই রাশেদ উদ্দিন এক বন্ধুর মাধ্যমে গাজীপুর থেকে বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে প্রতারকের বিকাশ নম্বরে সর্বমোট ৩০ হাজার ৬০০ টাকা পাঠান।
তিনি বলেন, একই তারিখে নাসিরের চাচি মোসা. শামসুন নাহার প্রতারকের বিকাশ নম্বরে মোট ২০ হাজার ৪০০ টাকা পাঠান। একইভাবে নাসিরের বন্ধু হুমায়ন কবীর প্রতারকের বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠান। নাসির টাকা পেয়েছে কি না জানতে তার চাচি ফোন করলে তারা প্রতারনার বিষয়টি বুঝতে পারে।
যেভাবে প্রতারণা : অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, হ্যাকার প্রথম তার নিজের মোবাইলে একটি ফেক মোবাইল নম্বর দিয়ে ইমো আইডি খোলেন। গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘IMO Find Friend’ নামক থার্ডপার্টি অ্যাপ ব্যবহার করে যে কোন এগারো ডিজিটের ফোন নম্বর ব্যবহার করে সার্চ দিলে সার্চ রেজাল্ট হিসেবে পরবর্তী ১০-৫০ টি ইমো অ্যাকাউন্ট চলে আসে। সেখান থেকে প্রধানত প্রবাসীদের টার্গেট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, টার্গেট ইমো আইডিটি প্রথমে একটি ইমো গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত করে পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন উপায়ে কল ও স্টিকার সেন্ড করে বিরক্ত করে কৌশলে তাকে ইমোতে রিং দিয়ে বলা হয় আপনি কি গ্রুপে থাকতে চান। স্বাভাবিকভাবে গ্রুপে থাকাটা ভিকটিম বিরক্ত করায় সে বলে না আমি থাকতে চাই না আমাকে গ্রুপ থেকে রিমুভ করে দেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক হ্যাকার এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে টার্গেটকে বলেন গ্রুপ থেকে রিমুভ করে দিচ্ছি আপনার ফোনে একটি ওটিপি কোড গিয়েছে সেটি দেন। কোড নিয়ে প্রতারক তার ফোনে টার্গেটের ইমো অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সেখান থেকে টার্গেটের বন্ধু-বান্ধব বা নিকট আত্মীয়দের বাছাই করে। অসুস্থতা বা জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে টাকা চেয়ে ইমোর মাধ্যমে ম্যাসেজ পাঠানো হয়। প্রতারকের এই ধরনের ম্যাসেজ বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হন ভুক্তভোগীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।