জুমবাংলা ডেস্ক : বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গাজী টিভির এক নারী সংবাদকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে জয় লিখেছেন, ‘গাজী টিভির নিউজরুম এডিটর রাহানুমা সারাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ঢাকার হাতিরঝিল লেক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এটি আরেকটি নৃশংস আঘাত। গাজী টিভি ধর্মনিরপেক্ষ সংবাদ চ্যানেল, যার মালিক গোলাম দস্তগীর গাজী। যিনি সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন’।
পুলিশের প্রাথমিক অনুসন্ধান বলছে, এটি পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা। আর গাজী টিভির হেড অব নিউজ ইকবাল করিম নিশান ফেসবুকে লিখেছেন, রাহানুমার স্বামী সায়েদ শুভ্রর ভাষ্য মতে এটি আত্মহত্যা। একইসঙ্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়ার আগে রাহনুমার মৃত্যু নিয়ে ভুল তথ্য না ছড়ানোর অনুরোধও করেন তিনি।
কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, দেশে বিদ্যমান শাসনব্যবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর হামলার কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।
এমন মন্তব্যে জয়কে একহাত নিয়েছেন নেটিজেনরা। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই পোস্টের মন্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন জয়ের কান্ডজ্ঞান নিয়ে। কেউ কেউ করছেন হাসি-ঠাট্টা-মজা।
সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীর জয়ের পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘গাজী টেলিভিশনের একজন নারী সাংবাদিক এবং এক্টিভিস্ট গতরাতে আত্মহত্যা করেছেন বলে অনুমান করছেন তার বন্ধুবান্ধব, তাকে যারা চেনে সবাই। হাতিরঝিল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় আবিষ্কার করেছেন ‘‘এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আরেকটা আঘাত’’। ’
জয়ের পোস্টে নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘আপনার দলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য মৃত ব্যক্তির বা তার মৃত্যুকে হাতিয়ার না করে দয়া করে তাকে সম্মান করুন। এটি এমন কিছু যা আপনি ডিজিটালভাবে শিখতে পারবেন না, এটি পরিবারের লালন-পালন থেকে আসে। কিছুটা সম্মান দেখাতে শিখুন’।
ফখরুল ইসলাম নামে আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘গুজরের ডিজিটাল প্রচার সম্পাদক আপনি’।
মো. রেজভী নামে একজন লিখেছেন, ‘আপনার লজ্জা থাকা উচিৎ। এতকিছুর পরও আপনারা মিথ্যাচার ছাড়েননি’।
সরকার পতনের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বিচ্ছিন্ন হামলাকে কেন্দ্র করে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা চালান সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে আরো বিতর্ক উসকে দেয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের গুজব। তবে দেশের সাধারণ মানুষের সামাজিক দৃঢ় বন্ধনে সেটা আর হালে পানি পায়নি। এখন নারী সংবাদকর্মীর মৃত্যুকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন তারই চেষ্টা মনে করছেন অনেকে।
ছাত্র-জনতার প্রাণঘাতি গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপরই দল এবং পরিবারের মুখপাত্র হিসেবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেন হাসিনাপুত্র জয়। যার বেশিরভাগই ভারতীয়।
এই সংবাদমাধ্যমগুলো একপাক্ষিক এবং পক্ষপাতমূলকভাবে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে অনুকম্পা দেখায়। যেখানে গত জুলাই এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ, কঠিন বলপ্রয়োগ, সরকারের একনায়ক মনোভাব নিয়ে কোনো প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি তাকে।
জয় এসব সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণআন্দোলনকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। আন্দোলনকারীদের ‘জঙ্গি’ তকমাও দিয়েছেন তিনি। এমনকি এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনে দাবিতে ভারতের হস্তক্ষেপও কামনা করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।