লাইফস্টাইল ডেস্ক : সমুদ্রজগতের গভীরতার কথা কম-বেশি সবাই জানেন। নানা সময় দুর্ঘটনায় কত জাহাজ কিংবা অন্যান্য নৌযান হারিয়ে গেছে সমুদ্রের অতল গহীনে। টাইটানিকসহ আরও অনেক দামি জাহাজ পানির তলদেশে থাকলেও এসব উদ্ধার করা হয়নি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সমুদ্রে ডুবে যাওয়া জাহাজের সংখ্যা তিন মিলিয়ন। যুদ্ধ, ঘূর্ণিঝড় বা অন্য জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষে তলিয়ে গেছে এসব জাহাজ।
সমুদ্রের তলদেশে হারিয়ে যাওয়া বিলাসবহুল জাহাজগুলোর সঙ্গে হারিয়ে গেছে অনেকের বহু মূল্যবান সম্পদ। সমুদ্রের তলদেশে ডুবে যাওয়া এসব মূল্যবান জিনিসের মূল্য ৬০ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এসব জাহাজ কেন উদ্ধার করা হয় না, তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের মনে।
সমুদ্রের তলদেশে হাজার কোটি টাকা দামের জাহাজ ডুবে গেলেও নানা কারণে সেসব উদ্ধার করা হয় না। এর প্রধান কারণ হলো আর্থিক সঙ্কট। জাহাজ তোলার ক্ষেত্রে প্রচুর অর্থ ব্যয় হবে, তাই এসব জাহাজ উদ্ধার করা হয় না। অনেক সময় দেখা যায় যে, জাহাজের দামের চেয়ে উদ্ধার খরচই বেশি। ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি বিলাসবহুল প্রমোদতরী কস্টা কনকর্ডিয়া ইতালির এক দ্বীপের কাছে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। পরবর্তীতে এটি উদ্ধারে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় হয়, যা জাহাজের নির্মাণব্যয়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি।
বেশিরভাগ জাহাজ উদ্ধার না করার অন্যতম কারণ হলো সমুদ্রের তলদেশে জাহাজের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করতে না পারা৷ ডুবে যাওয়া অনেক জাহাজের সঠিক অবস্থান এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে জাহাজ উদ্ধার করা একেবারে সহজ কাজ নয়। অবস্থান জানা গেলেও অনেক সময় জাহাজের অবস্থা ভালো থাকে না। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকার ফলে জাহাজের অনেক যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যায়, যা পরে কোনো কাজে আসবে না।
ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার না করার আরও একটি কারণ হলো এর পরিবেশ। এসব জাহাজ পানির নিচে থাকার ফলে সামুদ্রিক প্রবালে পরিণত হয়, যা সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে কাজ করে।
সমুদ্রে ডুবে যাওয়া বিভিন্ন সামরিক জাহাজও উদ্ধার করা হয় না। এর কারণ অবশ্য ভিন্ন। যদিও সামরিক জাহাজে অনেক বেশি পরিমাণে মূল্যবান সম্পদ থাকে। সামরিক জাহাজ উদ্ধার না করার অন্যতম কারণ মিলিটারি ফিলোসোফি। সামরিক বাহিনীতে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, যে যেখানে ধ্বংস হয়, তাকে সেখানেই কবর দেওয়া হয়। তাই, মূল্যবান হলেও অনেক ক্ষেত্রে সেই জাহাজ উদ্ধার করা হয় না।
এই বিজ্ঞাপনেই বদলে গিয়েছিল ঐশ্বর্যের জীবন, দেখুন সেই বিজ্ঞাপনটি
ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার না করার বিশেষ একটি কারণ অনুমতি ও আইনি জটিলতা। এসবের অনুমতির জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন হয়, যা সময়সাপেক্ষ। এ কারণে জাহাজ কোম্পানিগুলো ডুবে যাওয়া জাহজ উদ্ধার করতে চায় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।