ট্র্যাভেল ডেস্ক : কক্সবাজার শহর থেকে নিকটবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বরইতলীতে প্রবাহমান জীবন্ত পাহাড়ি ঝর্ণা এক মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পট। যা দেখলে যে কারো মন জুড়িয়ে যাবে। এটি কক্সবাজার থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে। এই ঝর্ণা বছরের ১২ মাস সচল থাকে। যাতায়াত কাছে হওয়ায় কক্সবাজার থেকেই ভ্রমণ করা সহজ।
কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে উখিয়া যায় এ রকম মিনিবাস পাবেন। মিনিবাসে করে উখিয়ার আগে মরিচ্যায় নেমে যান (বাসের হেল্পারকে বললেই নামিয়ে দেবে) ভাড়া ৩০ টাকা অথবা সিনএনজি নিয়েও যেতে পারেন ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা।
মরিচ্যা বাজারে নেমে প্রয়োজনীয় খাবার, পানি, ডেটল, ব্যান্ডেজ এগুলো কিনে নিন। মরিচ্যা বাজার রোডের বাম পাশে একটা বড় শিশুগাছ দেখতে পাবেন (স্থানীয় ভাষায় ঘুমগাছতলা বললেই দেখিয়ে দেবে)। শিশু গাছটির পাশ দিয়ে চলে গেছে পাকা সড়ক পূর্ব দিকে। সড়কটির মুখেই পাবেন ইজি বাইক এবং সিএনজি।
ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলবেন, বরইতলী-মংজয়পাড়া-লেবু বাগান ভাবনা কেন্দ্রের সামনে নামবেন। দরদাম ঠিক করে নেবেন। প্রতি ইজিবাইক ১০০-১৫০ টাকা এবং প্রতি সিএনজি ১৫০-২৫০ টাকা নেবে। যে গাইডের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তাকে ভাবনা কেন্দ্রের সামনে অপেক্ষা করতে বলবেন। ইজি বাইক আপনাদের ভাবনা কেন্দ্রের সামনে নামিয়ে দেবে।
ভাবনা কেন্দ্রের পাশ দিয়ে চলে গেছে কাঁচা সড়ক। প্রথমদিকে খুবই কাঁচা রাস্তা এবং পথের দু’দিকে লেবু বাগান। লেবু বাগান ফেলে পাহাড়ি পথ ছেড়ে নেমে যাবেন ঝিরিপথে। ঝিরিপথ দিয়ে স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে হবে ১ ঘণ্টার মতো।
পথ চলতে দিয়ে দেখা পাবেন জুম চাষ, জাম্বুরা বাগান, পেয়ারা বাগান, কলা বাগান, আম বাগান। ১ ঘণ্টা হাঁটার পর দেখবেন ঝিরিপথটি দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। হাতের ডান পাশে গেলে দেখা পাবেন প্রথম ঝর্ণার। অন্যপথে দেখা পাবেন সবচেয়ে বড় ঝর্ণাটির।
বরইতলী ট্রেইলটির বিশেষত্ব হলো, যে পাশ দিয়ে ঝর্ণায় ঢুকবেন ঐদিক ছাড়া বাকি তিনটি দিকে দিয়ে নেমে এসেছে তিনটি ঝর্ণা। বামে, ডানে এবং সামনে। ১০টির অধিক ছোট বড় ঝর্ণা রয়েছে আশেপাশের জায়গাজুড়ে। এসব ঝর্ণা কিছুটা দুর্গম পাহাড়ি জনপদ তাই পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম।
তবে, স্থানীয়রা এসব ঝর্ণা যে পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে পারে এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তাদের। হিন্দু, মুসলিম ও বিভিন্ন উপজাতি মিলেমিশে একাকার হয়ে শাক-সবজি, ফলমূল শস্যক্ষেতসহ নানাভাবে চাষাবাদ করছেন জীবন ধারনের জন্য। বসবাস করছেন পাশাপাশি।
যেসব পর্যটক সেখানে যান তারা সঙ্গে নিতে পারেন ট্যুর গাইড হিসেবে স্থানীয় একজনকে। যিনি আপনাকে নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটন স্পট দেখাবেন। তবে সেখানে যেহেতু বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা নেই সেই কারণে সন্ধ্যা ৬টার আগেই সেখান থেকে চলে আসতে হবে।
নাস্তায় তৈরী করুন দুর্দান্ত স্বাদের পালং শাকের পরোটা, শিখে নিন রেসিপি
কক্সবাজার শহর থেকে সেই ঝর্ণাস্থল যাতায়তে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা। প্রয়োজন মতো শুকনা খাবার, পানি, লাঠি, কাপড় ইত্যাদি নিয়ে যেতে হবে। কক্সবাজার ভ্রমণে আসলে এই জীবন্ত ঝর্ণাগুলো না দেখলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন পর্যটক বন্ধুরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।