আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বড় একটি যুদ্ধজাহাজ ডুবে গেছে। ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় ক্রিমিয়া উপকূলে সিজার কুনিকভ নামের ওই জাহাজটি ডুবে যায়। এই হামলার একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন।
তবে এই জাহাজডুবির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি রাশিয়া। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিজার কুনিকভ নামে একটি বড় রাশিয়ান উভচর জাহাজ রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়ার উপকূলে ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া অনুসারে, বুধবার ভোরে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। এতে ইয়াল্টা শহরের দক্ষিণে ওই জাহাজটিতে হামলার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা অধিদপ্তর জাহাজে হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে মাগুরা ভি৫ সী ড্রোনকে ওই জাহাজে আঘাত করতে দেখা যায়।
বিবিসি বলছে, দুই বছর আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরে বারবার হামলা করেছে ইউক্রেন। গত বছর স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে অনেক নৌবহর রাশিয়ান কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরের নভোরোসিস্কের জন্য উপদ্বীপটি ছেড়ে গেছে বলে দেখা গেছে।
ব্রাসেলসে সামরিক জোট ন্যাটোর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে পশ্চিমা প্রতিরক্ষামূলক এই জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একটি ‘মহান বিজয়’ অর্জন করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার এই যুদ্ধ আগামী সপ্তাহে তৃতীয় বছরে প্রবেশ করতে চলেছে এবং ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত জটিল এবং উত্তেজনাপূর্ণ’।
কর্নেল জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি মাত্রই গত সপ্তাহে কমান্ডার-ইন-চিফ নিযুক্ত হয়েছেন। বুধবার তিনি ফ্রন্ট লাইন পরিদর্শন করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, রুশ সৈন্যদের আভদিভকা শহর দখল করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টাকারী ইউনিটগুলোকে আরও শক্তিশালী করা হবে।
আভদিভকা শহরটি প্রায় খালি এবং পুরোটাই রাশিয়ান বাহিনীর হাতে বেষ্টিত। শহরটিকে রক্ষায় নিযুক্ত ইউক্রেনীয় এক সৈন্য এর আগে বলেছিলেন, সেখানকার পরিস্থিতি গুরুতর। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘শত্রুরা যাতে আমাদের ভূখণ্ডের গভীরে অগ্রসর হতে না পারে তার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
এদিকে রাতের আঁধারে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আভদিভকা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত খনি-সমৃদ্ধ শহর সেলিডোভে এক শিশুসহ তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চারটি ক্ষেপণাস্ত্র স্থানীয় হাসপাতাল ও প্রসূতি ওয়ার্ডের পাশাপাশি নয়টি ব্লকের ফ্ল্যাটে আঘাত করেছে।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার নৌবাহিনীর কাছ থেকে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, সিজার কুনিকভ কৃষ্ণসাগরে ডুবে গেছে। তারা কেবলমাত্র ছয়টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ক্রেমলিনও এ ঘটনায় কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ইউক্রেনের হামলার পরের ঘটনা দেখানো ওই ভিডিওটি সম্প্রতি আপলোড করা হয়েছে বলে বিবিসি ভেরিফাই নিশ্চিত করেছে।
ইউক্রেনের প্রধান গোয়েন্দা অধিদপ্তর টেলিগ্রাম মেসেজিং সাইটে বলেছে, ‘হামলায় সিজার কুনিকভ গুরুতর ক্ষতির শিকার হয় এবং ডুবতে শুরু করে। গ্রুপ১৩ নামক একটি ইউনিটের মাধ্যমে ইউক্রেনের আঞ্চলিক জলসীমার ক্রিমিয়ান উপকূলীয় শহর আলুপকা পার্শ্ববর্তী এলাকায় জাহাজটি ধ্বংস করা হয়।’
সংস্থাটি আরো বলেছে, হামলার পর জাহাজে থাকা ৮৭ জন ক্রু সদস্যকে উদ্ধার করার অভিযান ‘ব্যর্থ’ হয়েছে এবং ‘প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, তাদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছে’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।