জুমবাংলা ডেস্ক : সাধারণত আলু দিয়ে শিঙাড়া, সবজি দিয়ে রোল ও বল বানানো হয়। তবে এবার মাছের তৈরি শিঙাড়া, রোল, বল বানিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার একটি চা দোকানদার অনুকুল দাদা। তার দোকানে শিঙাড়া, রোল ও বল বানানো হয় মাছ দিয়ে। নাম হচ্ছে ফিশ শিঙাড়া, ফিশ রোল ও ফিশ বল। আর এই মুখরোচক খাবার খেতে ভিড় করেন সবাই।
স্থানীয়রা জানায়, বটতলী বাজারের অনুকূল দাদার দোকানে আলু দিয়ে নয়, মাছ দিয়ে বানানো হচ্ছে এসব খাবার। প্রতিদিন দুপুর গড়লেই এসব খাবার তৈরির কাজ শুরু করেন দাদা। বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাওয়া যায় মাছের তৈরি রোল-শিঙাড়া-বল।
সরেজমিনে দাদার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ফিশ শিঙাড়া, রোল ও বল ভাজা হচ্ছে। চুলা থেকে ট্রেতে নামানোর পরই বিক্রিও হচ্ছে। কেউ টেবিল-চেয়ারে বসে খাচ্ছে আবার কেউ বাড়ির জন্য নিয়েও যাচ্ছে। শেষ হলে অনেকে এসব নেওয়ার জন্য দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
স্থানীয়রা জানায়, ‘অনুকূল চন্দ্রের বাড়ি উপজেলার জালালপুর গ্রামে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজে পিওন পদে চাকরি করেন। দীর্ঘদিন ধরে চাকরির পাশাপাশি বিকেলে বটতলী বাজারে চা ও পেঁয়াজু বিক্রি করেন। এরইমধ্যে গত ছয় মাস থেকে অনুকুল মাছের তৈরি শিঙাড়া, রোল ও বল বিক্রি শুরু করেন। প্রথম দিকে তেমন সাড়া না মিললেও এখন তার ব্যবসা জমজমাট। একটি ফিশ শিঙাড়ার দাম পাঁচ টাকা। ফিশ রোল ও বলের দাম ১০ টাকা। সাইজে একটু ছোট হলেও দামে কম এবং খেতে সুস্বাদু।
অনুকূল চন্দ্র বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই বিকেল বেলায় এই বাজারে পেঁয়াজুর সাথে চা বিক্রি করছি। পিওন পদে চাকুরী করি বটে, যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলতো না। ভগবান এই দোকানের অছিলায় আমার পরিবারকে বেঁচে রেখেছে। আমার স্ত্রী গোলাপি রানী এসো নামে বেসরকারি একটি সংস্থার মৎস্য উৎপাদন ও বিপণন প্রকল্পের সদস্য। ওই সংস্থা মাছের শিঙাড়া, রোল ও বল তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি পাঙাশ, তেলাপিয়া, রুই ও সিলভার কার্প মাছ দিয়ে এসব খাবার তৈরি করেন। যে পরিমান খাবার তৈরি করেন তা সবই বিক্রি হয়। প্রথম দিকে ফেরত গেলেও এখন আর যায়না।
মাহমুদপুর গ্রামের জনি বলেন, দাদার দোকানে মাছের তৈরি শিঙাড়া-রোল ও বল পাওয়া যায়। এ কারণে বিকেলে ফিশ বল খেতে আসছি। মাছের তৈরি সবই ভাল, তবে বল খেতে খুবই সুস্বাদু। আমি প্রায়ই এই বাজারে খেতে আসি। আমার সাথে আরও অনেকেই আসে।
বেসরকারি সংস্থা এসোর মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন,‘বর্তমানে তাজা মাছের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত মাছ দিয়ে ফিশ প্রোডাক্ট আমাদের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে। অনেক পরিবারের বাচ্চারা কাঁটা বা গন্ধের কারণে মাছ খেতে চায় না। রেডি টু ইট ফিশ প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ গন্ধমুক্ত, কাঁটামুক্ত এবং পুষ্টিমান অক্ষুন্ন থাকায় সব বয়সের মানুষ এটা সহজেই খেতে পারবে।’ এতে বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বাড়তি আয়ও হবে। পিকেএসএফের আর্থিক সহযোগিতায় এসো এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।