লাইফস্টাইল ডেস্ক : কাক মানুষের অতিপরিচিত এক পাখি। প্রকৃতিতে কাক ও মানুষের সহাবস্থান। তাই কাক নিয়ে মানুষের মাঝে প্রচলিত আছে নানা গল্প, বিশ্বাস। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে যার কিছু কিছু লোক মুখ থেকে উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রায় সময়েই কাক নিয়ে একটি তথ্য প্রচার হতে দেখা যায়, যেখানে দাবি করা হয়, ‘কাক দ্বিতীয়বার জোড়া বাঁধে না। কারণ, এটি একমাত্র প্রাণী যে কিনা সঙ্গী হারানোর শোক কখনো কাটিয়ে উঠতে পারে না!’
“সঙ্গী মারা গেলে কাক আর জোড়া বাঁধে না”- এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ধারণা রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে কি বলেন? তার জন্য আমরা ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের ২০১৩ সালের একটি প্রতিবেদনের কাছে চোখ বোলাই। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, প্রায় ৯০ শতাংশ পাখি সামাজিকভাবে একগামী, অর্থাৎ তারা একটি নির্দিষ্ট সময় (এক প্রজনন মৌসুম থেকে শুরু করে বহু বছর) এক সঙ্গে বসবাস করে।
কিন্তু এই সামাজিক একগামিতা যৌন একগামিতাকে বোঝায় না। যৌন একগামিতা হচ্ছে, এক জোড়া নারী ও পুরুষ নিয়ে গঠিত, যারা নিজেদের বাইরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে না। যৌন একগামিতা সব সময় সামাজিক একগামী সম্পর্কে পাওয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটের কাক সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর অংশে পক্ষীবিদ্যা ল্যাবের ড. কেভিন জে ম্যাকগোয়ান বলেন, কাক সাধারণত এক সঙ্গীর সঙ্গেই দীর্ঘদিন থেকে যায়। তবে কোনো কারণে সঙ্গী যদি মারা যায় অথবা প্রজননে অক্ষম হয়, সে ক্ষেত্রে তারা সম্পর্ক ভেঙে নতুন কারও সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে।
পাখি বিষয়ক আরেকটি ওয়েবসাইট বার্ড ফ্যাক্ট থেকে জানা যায়, অধিকাংশ কাকই সারা জীবনের জন্য সঙ্গী বেছে নেয়। একসঙ্গে বাচ্চাদের বড় করে। তবে কোনো কোনো অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে তারা অন্য কাকের সঙ্গেও সম্পর্ক করতে পারে। যেমন, কোনো পুরুষ কাক যদি কোনো কারণে তার প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন স্ত্রী কাকটি নতুন সঙ্গী বেছে নেয়। প্রায় ১৮ শতাংশ কাকের বাচ্চার জন্ম হয় সঙ্গীর বাইরে অন্য কাকের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে।
সুতরাং, সব তথ্য বিবেচনা করে বলা যায় যে, “সঙ্গী মারা গেলে কাক আর জোড়া বাঁধে না”- এই ধারণা সত্য নয়। কাক সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে একগামী। অর্থাৎ দীর্ঘদিন এক সঙ্গীর সঙ্গে থাকে, কিন্তু কোনো কারণে সঙ্গী যদি মারা যায় অথবা প্রজননে অক্ষম হয়, সে ক্ষেত্রে তারা সম্পর্ক ভেঙে নতুন কারও সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।