আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোনটা বেশি কার্যকরী, বিশাল আকারের ‘ক্রুজার’, চৌকস ‘ডেস্ট্রয়ার’, সংঘাতকামী ‘ফ্রিগেট’, নাকি ছোটভাবে উপস্থিত ‘কর্ভেট’? সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, সমুদ্রের বুকে দেশগুলো তাদের সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধজাহাজ নিয়োজিত করছে। এই নিবন্ধে আমরা প্রকাশ করবো এই বিশেষত যুদ্ধজাহাজগুলোর কর্মক্ষমতা ও জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্র।
Table of Contents
ক্রুজার: আধিপত্যের নিদর্শন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে শুরু হওয়া ক্রুজার, বর্তমানেও যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্য রাখতে সমর্থ। ক্রুজার
শব্দটি এসেছে অলঙ্কারবোধক ইংরেজি শব্দ ‘крести́тель’ থেকে। এই বিশালাকৃতির যুদ্ধজাহাজ সমুদ্রপৃষ্ঠের যুদ্ধের জন্যই পুরোধায় ব্যবহৃত হয়। আত্মপ্রতিরক্ষার তুলনামূলক সমাহার এবং ন্যায্য দূরত্ব থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রক্ষেপণ করার ক্ষমতাই এই জাহাজকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।
বিশেষত্ব:
- ওজন: ৯,০০০–১৫,০০০ টন
- অস্ত্র: লং-রেঞ্জ মিসাইল, আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম
- কাজ: আকাশ ও ভূমিতে দূরপাল্লার হামলা
- উদাহরণ: আমেরিকার Ticonderoga-class ক্রুজার
ডেস্ট্রয়ার: চূর্ণ করার মিশন
সমগ্র বিশ্বেই বহিরাক্রমণ প্রতিসত্ত্বে রক্ষা পাওয়ার জন্য ডেস্ট্রয়ার তার সম্পূর্ণ কৌশলগত দক্ষতার অধিকার। ডেস্ট্রয়ার
শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ ‘destroy’ থেকে। সমুদ্র থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠে বা আকাশে থাকা শত্রুর ধারাবাহিক আক্রমণ প্রতিহত বা ধ্বংস করার জন্যই ডেস্ট্রয়ার ব্যবহৃত হয়।
বিশেষত্ব:
- ওজন: ৭,০০০–৯,০০০ টন
- অস্ত্র: টর্পেডো, অ্যান্টি-শিপ মিসাইল, এন্টি-এয়ার সিস্টেম
- কাজ: বহর রক্ষা, আকাশ ও পানির হুমকি মোকাবিলা
- উদাহরণ: কলকাতা-ক্লাস ডেস্ট্রয়ার (ভারতীয় নৌবাহিনী)
ফ্রিগেট: চেষ্টার সক্ষমতা
মানুষের ব্যবহৃত প্রাচীনতম যুদ্ধজাহাজ ফ্রিগেট এখনও নতুন প্রযুক্তির সাথে আপগ্রেড করা হয়েছে। এরা অপেক্ষাকৃত কম আক্রমণাত্মক অবস্থানে থেকে সীমান্ত রক্ষা ও পূর্ণরোধ করার কাজ করে।
বিশেষত্ব:
- ওজন: ৩,০০০–৫,০০০ টন
- অস্ত্র: সাবমেরিন বিধ্বংসী সোনার, ডেপথ চার্জ, মিসাইল
- কাজ: এসকর্ট, প্যাট্রোল ও টহল
- উদাহরণ: বাংলাদেশের ‘বিএনএস বঙ্গবন্ধু’
কর্ভেট: অসংবেদনশীল কিন্তু চৌকস
ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ কেউ কি বিশাল কর্মক্ষম হতে পারে? কর্ভেট সেই প্রশ্নের উত্তরে দাঁড় করায় নিজের কার্যকারিতা। তুমুল সংঘাত নয় বরং সংকটাভাস মোকাবিলা করতে কর্ভেটের গুরুত্ব অপরিহার্য।
বিশেষত্ব:
- ওজন: ৫০০–২,৫০০ টন
- অস্ত্র: হালকা কামান, অ্যান্টি-শিপ মিসাইল
- কাজ: সীমান্তে নজরদারি ও দুর্বল শত্রু জাহাজ ধ্বংস
- উদাহরণ: ‘বিএনএস ধলেশ্বরী’, ‘বিএনএস শঙ্খ’
বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজের পার্থক্য:
যুদ্ধজাহাজ | আকার | ওজন | মূল কাজ | অস্ত্রশক্তি | ব্যবহার |
---|---|---|---|---|---|
ক্রুজার | সবচেয়ে বড় | ৯–১৫ হাজার টন | আকাশ-ভূমি আক্রমণ | ভারী মিসাইল | গভীর সমুদ্র যুদ্ধ |
ডেস্ট্রয়ার | বড় | ৭–৯ হাজার টন | বহর রক্ষা, শত্রু ধ্বংস | টর্পেডো, মিসাইল | গভীর সমুদ্র |
ফ্রিগেট | মাঝারি | ৩–৫ হাজার টন | এসকর্ট, সাবমেরিন শিকার | মাঝারি অস্ত্র | উপকূলীয় ও গভীর সমুদ্র |
কর্ভেট | ছোট | ৫০০–২,৫০০ টন | নজরদারি, সীমান্ত সুরক্ষা | হালকা কামান | উপকূল ও নদী পথ |
FAQs
- ক্রুজার কীভাবে বিশেষ ধরনের যুদ্ধজাহাজ?
বিশালাকার এই জাহাজ আকাশ ও ভূমিতে দূরপাল্লার হামলা করতে সক্ষম এবং একে কার্যকরভাবে গভীর সমুদ্রের যুদ্ধের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
- ডেস্ট্রয়ার কোন কিশোর?
ডেস্ট্রয়ার সাবমেরিন, ফাইটার জেট, এবং শত্রু যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের জন্য দ্রুতগামী, ভারসাম্যপূর্ণ, এবং প্রসিদ্ধ যুদ্ধজাহাজ।
- ফ্রিগেটের মূল কাজ কী?
ফ্রিগেটকে মূলত উপকূলীয় বা মাঝারি দূরত্বের অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং এর কাজ হল উন্নয়নশীল শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা।
- কর্ভেট কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়?
কর্ভেট ক্ষুদ্র আকারের হলেও এটি উপকূলীয় অঞ্চল ও নদী পথে সীমান্ত পাহারায় দক্ষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।