জুমবাংলা ডেস্ক : প্রবল বর্ষণের ফলে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির চরম চিত্র দেখা গেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে, যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় হাঁটু পানির মধ্যে। এই অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন প্রায় চার হাজার পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা।
Table of Contents
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা: জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগের বাস্তব চিত্র
৩১ মে, শনিবার, সকাল থেকেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ধর্মপুর ক্যাম্পাসে দেখা যায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া শ্রেণিকক্ষ। কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন-১, বিজ্ঞান ভবন-২, মিলিনিয়াম ভবন এবং অর্থনীতি ভবনের নিচতলায় হাঁটু সমান পানি জমে রয়েছে। এই পানিতে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে।
ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রধান ফটক, অশোকতলা রেলগেট এলাকা ও ধর্মপুরের তিনটি ফটক পেরিয়ে হাঁটু পানি মাড়িয়ে আসতে হয়েছে। এই জলাবদ্ধতায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আট বছর পর পুনরায় চালু হওয়ায় উত্তেজনা থাকলেও, বাস্তব চিত্র অনেকটাই হতাশাজনক।
ছাত্র-অভিভাবকের অভিজ্ঞতা: পরীক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়াল পরিবেশ
লাকসাম থেকে আসা আছমা আক্তার বলেন, “স্বপ্ন নিয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছি, কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।” একই অভিজ্ঞতার কথা জানান চৌদ্দগ্রামের খাদিজা আক্তার, যিনি বলেন, “পুরো ক্যাম্পাসকে মুক্ত জলাশয়ের মতো মনে হচ্ছে।”
শুধু শিক্ষার্থীরা নন, অভিভাবকেরাও এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। হাসানপুরের কলেজ শিক্ষক আব্দুল জব্বার জানান, “মেয়েকে নিয়ে এসেছি, কিন্তু পানি ভরা কক্ষে পরীক্ষা দিয়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।”
এই বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞা বলেন, “জলাবদ্ধতা সমস্যাটি দীর্ঘ ২০ বছরের পুরোনো। আমি দায়িত্বে এসেছি মাত্র কয়েক মাস হলো। পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, শিক্ষা প্রকৌশল অফিসে জমাও দেওয়া হয়েছে।”
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান পরিকল্পনা
এই দুর্গতিপূর্ণ পরিবেশ প্রশ্ন তোলে ভবিষ্যতের ভর্তি পরীক্ষাগুলোর নিরাপত্তা ও পরিবেশ ব্যবস্থা নিয়ে। যেহেতু জাতীয় পর্যায়ে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা জলাবদ্ধতার কারণে এমন বিপর্যয়ে পড়েছে, তাই এটি নিয়ে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ক্যাম্পাসের ড্রেনেজ সিস্টেম আপগ্রেড করা, রেইনওয়াটার ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা গ্রহণ এবং জরুরি পরিস্থিতির জন্য বিকল্প কেন্দ্র নির্ধারণ করা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও কেন্দ্র নির্বাচন ও পরিবেশ পর্যালোচনায় আরও সর্তক হতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা এ ধরনের পরিবেশে আর ভর্তি পরীক্ষা দিতে না হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কেবল শিক্ষা অর্জনের পথ নয়, এটি হাজারো শিক্ষার্থীর জীবনের মাইলফলক। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়বদ্ধ ও প্রস্তুত হতে হবে।
❓ প্রশ্নোত্তর (FAQs)
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হয়?
সাধারণত প্রতি বছর মে-জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়, তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করে।
ভর্তি পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন থাকে?
বিষয়ভিত্তিক এমসিকিউ প্রশ্ন থাকে, যেখানে ইংরেজি, বাংলা, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত থাকে।
ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থানীয় কলেজগুলোকে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করে এবং তা পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লেখ থাকে।
জলাবদ্ধতায় পরীক্ষার্থীদের জন্য কোনো সহায়তা আছে?
বর্তমানে তাৎক্ষণিক সহায়তার ব্যবস্থা নেই, তবে অভিভাবকদের ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে মাঝে মাঝে সমাধান আসে।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে কী ডকুমেন্ট লাগে?
প্রবেশপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন, এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর আবশ্যক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী বর্ষার ওপর বর্বর হামলা, ছাত্রসমাজের জবাবদিহির ডাক
পরীক্ষার ফলাফল কবে প্রকাশ হয়?
সাধারণত এক মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হয়, তবে এটি নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়সূচির উপর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।