আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান টিপিএস (TPS) অভিযোগ করেছে যে, ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে তারা সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে বাদ দিয়ে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১৭ সালে প্রাথমিকের দুই কোটি বই ছাপানোর জন্য টিপিএস দরপত্রে অংশ নিলে তারা সর্বনিম্ন দরদাতা হয়, কিন্তু তারপরও তাদেরকে বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বই ছাপানোর কাজ দেওয়া হয় ভারতের প্রতিষ্ঠান কৃষ্ণা ট্রেডার্স, ভিকে উদ্যোগ, গফসন, পৃতম্বরা বুকস ও সুদর্শন বোর্ড অ্যান্ড পেপারকে। এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিকভাবে উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে ২০১১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়, যেখানে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার ছাপাখানা অংশ নিত। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়াভাবে কাজ পেয়ে যায় এবং কোরীয় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই বাদ পড়েছিল।
এই অনিয়মের তদন্তের জন্য দুদক গতকাল রোববার এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) কার্যালয়ে অভিযান চালায়। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য ও উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান রোকন। তারা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য এনসিটিবি থেকে নথি সংগ্রহ করেন এবং আরও কিছু নথি চেয়েছেন, যাতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
এছাড়া, সাবেক এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ করে বইয়ের নিম্নমান ও সময়মতো বই না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। সাবেক চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বই ছাপানোর তদারকি করার জন্য তিনবার ভারতে গিয়েছিলেন, এবং এই তদারকি করতে খরচ করেছিলেন ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান বলেছেন, তারা দুদকের কাছে প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে এবং আরও নথি সরবরাহ করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, সত্য বেরিয়ে আসবে এবং সঠিক বিচার হবে।
দুদক ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে যে, কোরিয়ান কোম্পানি টিপিএসের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে এবং তারা এর অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।