বিনোদন ডেস্ক : রাজধানী ঢাকার রামপুরা টেলিভিশন ভবনের পাশের একটি বাড়া বাসায় একাই থাকতেন একসময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনি কিশোর। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে হঠাৎই তার মৃত্যুর খবর আসে। বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। মৃত্যুর প্রায় একদিন পার হতে চললেও এখনো মরদেহের শেষ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়নি।
এ গায়ক অবশ্য মৃত্যুর আগে একমাত্র মেয়ে নিন্তিকে জানিয়ে গেছেন, তার মরদেহ কী করতে হবে। রোববার (২০ অক্টোবর) একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি জানান মনি কিশোরের বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অশোক কুমার মণ্ডল। তিনি জানান, মনি কিশোর হচ্ছে তার পোশাকি নাম। প্রকৃত নাম হচ্ছে অরুণ কুমার মণ্ডল।
অশোক কুমার মণ্ডল জানান, বাবা অনিল কুমার মণ্ডল পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। আর অরুণ কুমার মণ্ডল ছিলেন কিশোর কুমারের ভক্ত। ডাকনাম অবশ্য মনি ছিল। কিশোর কুমারের ভক্ত হওয়ায় নামের সঙ্গে ‘কিশোর’ জুড়ে দিয়েছিলেন। বেঁচে থাকা অবস্থায় সংবাদমাধ্যমকে একবার মজা করে মনি কিশোর বলেছিলেন, ওস্তাদের নামের একাংশ কুমার শানু নিয়েছেন। আর আমি নামের আরেক অংশ নিয়েছি।
নব্বই দশকের শুরুর দিকে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন মনি কিশোর। তবে দেড় যুগ আগে তাদের দাম্পত্যজীবনের ইতি ঘটেছে। আর বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন গায়ক। সেই হিসেবে তার মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন গায়কের ভাই অশোক কুমার। এ ব্যাপারে তিনি জানালেন, জীবত অবস্থায় দাফনের বিষয়টি একমাত্র মেয়ে নিন্তিকে জানিয়েছিলেন মনি কিশোর।
অশোক কুমার বলেন, মেয়ে আমার বড় ভাইকে জানিয়েছে, তার বাবাকে যেন দাফন করা হয়। ওর বাবা এটা নাকি বলে গিয়েছিল। যেহেতে মেয়েকে বলে গিয়েছে, এ জন্য তার ইচ্ছামতই দাফনের কাজ করা হবে। এ নিয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাব না আমরা।
নব্বই দশক থেকে সুরেলা কণ্ঠের মাধ্যমে শ্রোতাদের মন জয় করে এসেছেন মনি কিশোর। বেশ আগের গাওয়া ‘কী ছিলে আমার, বলো না তুমি’ গানটি এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে শোনা যায়। আর এমন জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা দীর্ঘ সময় ছিলেন আড়ালে। অনেকটা অভিমান করেই নিজেকে আড়ালে রেখেছিলেন তিনি। শেষ দিকে এমনটাও হয়েছে যে, কেউ যেন যোগাযোগ করতে না পারে, এ জন্য নিজের ব্যবহৃত পুরনো ফোন নম্বরও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দেয়া মনি কিশোর রেডিও-টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও অল্প গান গেয়েছেন। প্লে-ব্যাকেও সেভাবে গান গাইতে শোনা যায়নি তাকে।
পুলিশ কর্মকর্তা বাবার সাত সন্তানের মধ্যে চতুর্থ ছিলেন তিনি। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আর দেড় যুগ আগে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় গায়কের। এরপর থেকে একাই থাকতেন তিনি। একমাত্র মেয়ে নিন্তি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। ১৯৫৮ সালে নড়াইল জেলার লক্ষ্মীপুরে মামাবাড়িতে জন্ম মনি কিশোরের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।