কালোজিরাকে প্রায় সবাই মশলার উপাদান হিসেবেই চেনেন ও জানেন। কেউ কেউ হয়তো টং দোকানে চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার সময় খেয়ে থাকেন। আবার কেউ ভালো লাগা থেকে মাঝে মধ্যে অল্প পরিমাণ হাতের তালুতে নিয়ে চিবিয়ে খান। কিন্তু জানেন কী, এর নানা উপকারিতা রয়েছে।

কালোজিরা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া হজমশক্তি উন্নত করে, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা ও পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। আবার মস্তিস্কের কার্যকারিতা বাড়ায়, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। কালোজিরা খাওয়ার নানা উপকারিতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানাকরী প্ল্যাটফর্ম মেডিসিন নেট। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক-
কালোজিরা কী:
কালোজিরাকে নাইজেলা স্যাটিভা বা নাইজেলা সিডও বলা হয়। এর ফুলগুলো খুবই কোমল ও ফ্যাকাসে নীল এবং সাদা, পাঁচ থেকে দশটি পাপড়ি বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এর তীব্র তিক্ত স্বাদ ও গন্ধ রয়েছে এবং এটি মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের চিকিৎসায় কালোজিরাকে ফোড়া, হারপিস জোস্টারসহ বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও এতে ভিটামিন এ, সি, এবং ফসফরাস থাকে।
কালোজিরার স্বাস্থ্য উপকারিতা:
অন্ত্রকে রক্ষা করা:
কালোজিরার বীজে পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া হেলিওব্যাকটর পাইলোরির বিরুদ্ধে আলসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে মনে করা হয়। কালোজিরা এবং থাইমোকুইনোন (কালোজিরায় বিদ্যমান) ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং নেক্রোটাইজিং আলসারেটিভ কোলাইটিস প্রতিরোধ করে।
হাঁপানি প্রতিরোধ:
ওষুধের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কালোজিরা খাওয়া হলে শ্বাসকষ্ট, কাশি ও অন্যান্য শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, কালোজিরা হাঁপানির লক্ষণ কমাতে পারে।
মেথিসিলিন-প্রতিরোধী স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াসের চিকিৎসা (এমআরএসএ):
এমআরএসএ খুবই মারাত্মক সংক্রমণ, এর চিকিৎসাও বেশ কঠিন। গবেষকরা জানিয়েছেন, কালোজিরা এমআরএসএ রোগীদের সুস্থতায় দুর্দান্ত কাজ করে। কালোজিরার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা সংস্পর্শে আসা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে।
রক্তচাপ কমায়:
অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি কালোজিরাও রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। তবে তীব্র উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে এটি কখনো বিবেনচনা করা ঠিক নয়। কিডনির বিষাক্ততার বিরুদ্ধে কালোজিরার তেল কার্যকর বলে মনে করা হয়।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার প্রতিরোধ:
ক্যালোজিরা এমন একটি অপরিহার্য উপাদান, এতে থাকা থাইমোকুইনোন অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার প্রদাহ-প্ররোচিত যৌগের মাত্রা ব্যাপকভাবে কমায়।
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় সহায়তা:
কালোজিরায় অ্যালার্জি বিরোধী প্রভাব রয়েছে। এটি অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসা হিসেবে বিবেচিত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, হালকা থেকে মাঝারি এবং গুরুতর অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসার জন্য নাকে কালোজিরার তেল ব্যবহার করে মানুষ। ছয় সপ্তাহ পর ১০ জনের মধ্যে ৯ জন জানিয়েছেন, তাদের লক্ষণগুলো কমেছে বা একদম ঠিক হয়েছে।
নারী স্বাস্থ্য:
কালোজিরা আয়রন ও ক্যালসিয়ামের দুর্দান্ত উৎস। এ জন্য এটি স্তন্যদানকারী, অন্তঃসত্ত্বা ও ঋতুস্রাবরত নারীদের জন্য উপকারী। কালোজিরা নারীদের বুকের দুধের নিঃসরণ বাড়াতে কাজ করে। কেননা, এতে প্রচুর পরিমাণ থাইমল থাকে, যা স্তন্যপায়ী গ্রন্থির নিঃসরণ বাড়ায়। কালোজিরাযুক্ত তেল মালিশে স্তনের ব্যথা বা মাসিক চক্রের ব্যথা উপশম হয়।
উর্বরতা বৃদ্ধি:
কালোজিরা খাওয়া হলে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া হলে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গতিশীলতা বাড়ে। তবে এটি গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা বাড়ায় কিনা, সেটি জানা যায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



