আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) জানিয়েছে, গত সাত বছরে দৈনিক অন্তত ১০০ কোটি টাকা জালিয়াতির শিকার হচ্ছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। সবচেয়ে বেশি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমন তথ্য জানা গেছে।
আরবিআই জানায়, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেবল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই মোট আড়াই লক্ষ কোটি টাকা প্রতারণার শিকার হয়েছে। তার ৮৩ শতাংশই (টাকার অঙ্কে প্রায় ২ লক্ষ কোটি) ঘটেছে পাঁচটি রাজ্যে। এক্ষেত্রে শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে দিল্লি, তেলাঙ্গানা, গুজরাট ও তামিলনাড়ু।
রিপোর্ট বলছে, প্রতারণার ঘটনাগুলোর অধিকাংশই হচ্ছে নিয়ম ভেঙে দেওয়া ঋণ। নীরব মোদী-মেহুল চোক্সী প্রতারণা কাণ্ডে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। তার আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা পাওনা বাকি রেখে গোপনে দেশ ছেড়েছিলেন বিজয় মাল্য।
এরপর এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধে অনেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো যে জালিয়াতি আটকাতে পারছে না, তা বুঝা যাচ্ছে আরবিআই-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে। সেই রিপোর্টের পরিসংখ্যান বলছে, গত সাত বছরে দৈনিক গড়ে অন্তত ১০০ কোটি টাকা জালিয়াতির শিকার হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো।
আজ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ চলবে না যেসব স্মার্টফোনে
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রণালয় দাবি করছে, গত দুই বছরে দেশজুড়ে ব্যাংক প্রতারণার ঘটনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারির সময় বিভিন্ন শিল্পে ব্যবসা স্তিমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঋণ নেওয়ার হারও কম ছিল। কিন্তু তারপরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো থেকে গড়ে দৈনিক ১০০ কোটি টাকার পুঁজি হাতছাড়া হওয়া আটকানো যায়নি। যা ‘উদ্বেগজনক’ বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত একটি সংস্থার পরিচালক সঞ্জয় কৌশিকের মতে, বহু ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কোনো জামানত ছাড়াই বিপুল অঙ্কের ঋণের আবেদন মঞ্জুর করেছে। শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোকে জামানত ছাড়াই দেওয়া ওই বড় অঙ্কের ঋণগুলো আদায় করাই সবচেয়ে অসুবিধাজনক বলে তার মত।
ব্যাংক প্রতারণা রুখতে মোদি সরকার বার বার নজরদারিতে জোর দেওয়ার কথা বললেও, গত সাত বছরে আসলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, রাষ্ট্র্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এ ধরনের অনাচার রোখা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে ‘বড় বিপর্যয়’ দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে তহবিল জুগিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।