চট্টগ্রামের আজিম ও মানিকগঞ্জের বৃষ্টি আন্তর্জাতিক পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে সক্রিয়। ২৮ বছর বয়সী বৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ‘বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল’ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে বাস্তবে তিনি আন্তর্জাতিক পর্ন সাইটে জনপ্রিয় পারফর্মার। ২০২৪ সালের ১৭ মে তার প্রথম ভিডিও প্রকাশের পর মোট ১১২টি ভিডিওতে ২৬৭ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ হয়েছে।
বৃষ্টি ও আজিম একাধিক আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটে ভিডিও প্রচার করেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একাউন্টগুলো ব্যবহার করে নতুন কনটেন্টের লিংক শেয়ার এবং দর্শকদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করার প্রচারণা চালান। গত অক্টোবরের প্রথম দুই সপ্তাহে বিভিন্ন ফেসবুক পেজে অন্তত ৫০টি পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য দেখা যায়।
আজিম চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন। স্থানীয়রা তাকে ‘অন্ধকার জগতের মানুষ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বৃষ্টি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। তার প্রথম স্বামীর বাড়ি থেকে দীর্ঘদিন আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি আন্তর্জাতিক পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেন। দু’জনই দরিদ্র পরিবার থেকে ওঠে এসেছেন, তবে এখন সামাজিক মাধ্যমে তাদের জীবনযাপন বিলাসবহুল।
আজিম বলেন, আমার বাবা-মা ও পরিবারের সবাই জানে যে আমরা পর্ন ভিডিও বানাই।
পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট আজিমকে মাদক সংক্রান্ত মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে কয়েকদিনের মধ্যে মুক্তি পান। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে না এলেও বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী এ ধরনের কার্যক্রম ফৌজদারি অপরাধ।
তদন্তে দেখা গেছে, বৃষ্টির নামে টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা হয়েছে, যা যৌথভাবে তারা পরিচালনা করেন তারা। চ্যানেল ও সোশাল মিডিয়ায় নিয়মিত ভিডিও লিংক শেয়ার করা হয়। বিভিন্ন পোস্টে তারা আয়ের স্ক্রিনশট ও নগদ অর্থ দেখিয়ে নতুনদের উৎসাহিত করেন।
বৃষ্টির ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট যথাক্রমে প্রায় ৪৯ হাজার ও ১২ হাজার ফলোয়ার সমৃদ্ধ। উভয় একাউন্টে নিজেকে ‘বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান মডেল” দাবি করা হয়েছে। পোস্টে তারা স্বাধীন ও বিলাসী জীবনধারার ছবি, নগদ অর্থ, প্রাইভেট গাড়ি ও মোটরবাইকের চিত্র প্রকাশ করেছেন।
তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বান্দরবান থেকে এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।
তিনি জানান, ওই দম্পতি বিদেশি একটি ওয়েবসাইটে নিয়মিত পর্ন কনটেন্ট আপলোড করতেন। তাদের পরিচালিত চ্যানেলটি বিশ্বের জনপ্রিয় পর্ন সাইটগুলোর মধ্যে একটি শীর্ষস্থানে ওঠে আসে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারা বাংলাদেশে বসেই ভিডিও ধারণ, সম্পাদনা ও আপলোড করতেন এবং এর মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এই যুগল শুধু নিজেরাই অপরাধই করছে না বরং অন্যদেরও এই পথে যুক্ত হতে উৎসাহিত করছেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে পর্ন ভিডিও বানানো এবং প্রচারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।