রোপা আমন মৌসুমে জমি চাষ ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় কাটছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর চাষিদের। তাদের অভিযোগ, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কিনতে গিয়ে দেড় গুণ দাম গুনতে হচ্ছে। অসাধু ডিলাররা তাদের বাড়তি দাম দিতে বাধ্য করছেন।
চারিয়াকোনা গ্রামের মো. শাজাহান চলতি মৌসুমে আমন চাষের জন্য এক বিঘা জমি তৈরি করেছেন। তাঁর তিন বস্তা ডিএপি সার দরকার। প্রতি বস্তা ৫০ কেজি সারের সরকারি দাম এক হাজার ৫০ টাকা। কয়েকদিন আগে বিসিআইসির কটিয়াদী উপজেলার ডিলার শীতল সাহার দোকানে গিয়ে তিন বস্তা সার কেনেন শাজাহান। এ জন্য দোকানের ম্যানেজারকে প্রতি বস্তায় ২০০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
একই গ্রামের মনজিল মিয়ার অভিযোগ, ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। যে কারণে তিনিসহ এলাকার চাষিদের চড়া দামে ডিএপি সার কিনতে হয়েছে।
চার-পাঁচ দিন আগে চান্দপুর ইউনিয়নের বিএডিসি ডিলার মন্টু মিয়ার কাছ থেকে দুই বস্তা ডিএপি সার আনতে লোক পাঠান শেখেরপাড়ার কৃষক শেখ জমসেদ। এ জন্য তাঁর খরচ হয়েছে তিন হাজার টাকা। শেখ জমসেদের ভাষ্য, এলাকার সব কৃষককেই ডিএপি সারের জন্য নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
জেলা খামারবাড়ির হিসাব অনুযায়ী, কটিয়াদী উপজেলায় এবার হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের আমন চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ১৪৩ হেক্টর জমি। তাদের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৩ হাজার ৮৪৬ টন।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) কটিয়াদীর ডিলার শীতল সাহার ভাষ্য, বিসিআইসির ডিলাররা বেশি দাম নেন না। তবে খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে কৃষক বেশি
দামে কিনতে পারেন। তিনি জানিয়েছেন, কটিয়াদীর একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে মোট ডিলার ১৫ জন। কোনো ইউনিয়নে একজন, কোনো ইউনিয়নে দুইজন ডিলার। ডিলারপ্রতি বরাদ্দ হয়েছে ১৪৩ বস্তা ডিএপি সার। যেসব ইউনিয়নে দুইজন ডিলার, সেখানে দ্বিগুণ বরাদ্দ হয়েছে। একজন ডিলারের ইউনিয়নে তাই বরাদ্দও কম।
শীতল সাহা বলেন, কৃষকরাও এখন ইউরিয়ার পরিবর্তে ডিএপি বেশি ব্যবহার করছেন। যে কারণে যেসব ইউনিয়নে একজন ডিলার, সেখানে ডিএপির বরাদ্দ কম মনে হচ্ছে। এই সুযোগে কিছু খুচরা বিক্রেতা বাড়তি দামে সার বিক্রি করছেন। তবে ইউরিয়ার ক্ষেত্রে এমন সমস্যা নেই।
ডিএপি সারের বরাদ্দ গত বছরের মতোই জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, কৃষকরা অতিরিক্ত সার ব্যবহার করায় কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তাই মাত্রার বাইরে ডিএপি সার ব্যবহার না করতে কৃষকদের বোঝাচ্ছেন। এতে জমির ক্ষতি হবে। কিন্তু অনেক কৃষক এটা মানছেন না। খুচরা বিক্রেতারা যেন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি দামে সার বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য তাদের নজরদারি চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।