জুমবাংলা ডেস্ক : গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে সমন্বয়কদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাবার ছবি এবং তাদের দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি দেওয়ার ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। তার এই কর্মকাণ্ডকে জাতির সঙ্গে মশকরা বলেও মন্তব্য করেন উচ্চ আদালত।
নতুন অফিসে সবশেষ ২ আগস্ট দায়িত্ব পালন করেছিলেন হারুন। এরপর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তার অবস্থান নিয়ে এক রকমের ধোঁয়াশা রয়েছে। এবার অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমাকে ঘিরে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। তখনো আমি চুপ ছিলাম। সরকার যখন বলল, সবাইকে কাজে যোগ দিতে। তখন আমি গত ৮ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে তখনই যোগ দিতে নিষেধ করেন। আমাকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলেন। আমি যোগদান করতে গেছি। কিন্তু আমি যোগ দিতে পারিনি। দুই দিন পর দেখি আমার নামে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, কমিশনার ও আমাকে হুকুমের আসামি করা হয়। তখন আমি অবাক হলাম।
আমি তো ডিবিতে কাজ করি। ডিবির কাজ হলো মামলা তদন্ত করা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশ দিলে আমরা গ্রেপ্তার করি। মোহাম্মদপুরে তো আমি গিয়ে মারামারি করিনি, এটা তো আমার কাজ না। অতিরিক্ত কমিশনার কি মারামারি করতে যায়? আর ডিএমপিতে কমিশনারের পরে ৬ জন অতিরিক্ত কমিশনার। আমি হলাম ৬ নম্বর কমিশনার। সেখানে আমার নামে যখন মামলা হলো তখন তো একটু…। আবার বলা হলো মামলা হলেও সমস্যা নেই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে গ্রেপ্তার করা হবে না।
আমি মনে করলাম ভালো কথা। ভাবলাম জয়েন করব। পরের দিন দেখলাম একজন উপদেষ্টা বললেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জয়েন করেননি আপনারা তাদের ধরে নিয়ে আসেন। আমি তখন আরও অবাক হলাম। আমি যদি চাকরিতে জয়েন না করি তাহলে প্রসিডিং করবে। আর যোগ দিলে আমাকে দিয়ে জোর করে চাকরি করাবেন। এটা শোনার পরে আমার মনে হলো রিস্ক। মানে আমার লাইফ ঝুঁকির মধ্যে। এখন মানুষকে ধরে যেভাবে পেটানো, ডিম মারা হচ্ছে। যদি আমাকে…। আগে তো বাঁচতে হবে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে একটু চুপ আছি।
পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়াল টপকে পালাতে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার বিষয়ে সাবেক ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, আমি পুলিশ সদর দপ্তরে যাইনি।
সরকারপ্রধান (শেখ হাসিনা) সবাইকে বিপদে ফেলে চলে গেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমি ছোট মানুষ। আমি ডিএমপির প্রধানও না, পুলিশের প্রধান না। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমাকে মোয়া বানানো হচ্ছে। আমি কেন আলোচিত-এর একটাই কারণ যেখানে অপরাধ হয়েছে সেখানে আমি মানুষকে সেবা দিয়েছি। মানুষ যখন যে সমস্যায় পড়েছে তারা থানায় না গিয়ে ডিবিতে আসত। ডিবিতে আমার চাকরিজীবনে মানুষের উপকার করেছি। কারো ক্ষতি করিনি।
দেশবাসী কেন আপনাকে ঘৃণা করে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১২ বছর চাকরি করেছি। আমার কোনো অন্যায় থাকলে আপনি আমাকে ছাড়তেন? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? এখন আমি একটু অড পজিশনে পড়ে গিয়েছি, এখন যদি বলে হারুন খুব খারাপ… তাহলে আমি কী খারাপটা করেছি বলেন। আমি কার ক্ষতি করেছি? আমার কাছে যারা-যেসকল আসামিরা ছিল… এমনও বড় বড় বিএনপি নেতারা আমার কাছে গিয়েছিল.. তারা আমাকে বলতো আমার ফ্যামিলি প্রবলেম আছে, আমার ফ্যামিলি প্রবলেম সলভ করে দিও। এসব বিষয়ে আমি আরেকদিন কথা বলবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।