জুমবাংলা ডেস্ক : জনপ্রিয় ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, রাজাকার-রাজাকার গালি দেওয়ার দিন শেষ। কী দিন আসলো, আল্লাহ আমাদের দেখাইছে। রাজাকার শব্দটি এখন অ্যাওয়ার্ড হয়ে গেছে। পরিস্থিতি পাল্টে দিতে আল্লাহর সময় লাগে না।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সামাজিক সংগঠন আল ইসলাম ট্রাস্ট আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আমাদেরকে বলে মৌলবাদী। আমরা আসল কথা বলি, ভালো কথা বলি, দেশ প্রেমের কথা বলি, জনগণের কথা বলি, আমরা মা-মাটির কথা বলি, ইসলামের কথা বলি, দেশের সমৃদ্ধির কথা বলি। এজন্য আমাদেরকে বলে মৌলবাদ। আবার আমাদের বলে ধর্ম ব্যবসায়ী। আমরা ধর্মের কথা প্রচার করি, যেটা দেশের জন্য, জনগণের জন্য ভালো।
তিনি আরও বলেন, যারা ইসলামের কথা বলে, কোরআনের কথা বলে তারা ধর্মব্যবসায়ী নয়। খবরদার আলেমদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না, নিজেকে ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেন না। এদেশের আসল পরিচয় ইসলাম।
মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ধৈর্য এমন এক গাছ, এই গাছের চারদিকে কাঁটা কিন্তু এই গাছের ফল সুমিষ্ট। আপনারা ১৬ বছর ধৈর্য ধরেছেন, ফল দিয়েছে আল্লাহ। বিপদ আসবে, জুলুম আসবে। ধৈর্য ধারন করবেন, ফলাফল পেয়ে যাবেন।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার শতবর্ষী আলেম হাফেজ মাওলানা মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে আমন্ত্রিত মুফাসসির হিসাবে আরও বক্তব্য দেন এটিএন বাংলার আলোচক শাহ ওয়ালী উল্লাহ, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের ইসলামী আলোচক খতিব মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন ও কুমিল্লার মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার।
এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, জামায়াত নেতা আসাদুজ্জামান সোহেল, মাওলানা মোজাম্মেল হক, নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান প্রমুখ।
এর আগে নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে তাফসিরুল কোরআনের মঞ্চে ড. মিজানুর রহমান আজহারী উপস্থিত হলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন আয়োজক সংগঠন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামী। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিএনপি নেতারা। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সঙ্গে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এরপর মিজানুর রহমান আজহারী দুপুর সোয়া ২টার দিকে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে দুই হাত উঁচিয়ে উপস্থিতি লাখ লাখ জনতাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বয়ান শুরু করে বলেন, আজকে এই মঞ্চে বিএনপির প্রিন্স ভাই জেলা বিএনপির পুরো টিম নিয়ে এসেছেন। জামায়াতের আকন্দ (মতিউর রহমান) ভাই এসেছেন। বৈষম্য বিরোধীরাও এসেছে। এতে বুঝা যায় পুরো বাংলাদেশ আজকের এই মঞ্চে। এটা অনেক সুন্দর।
এদিকে মিজানুর রহমান আজাহারীর এই মাহফিলকে কেন্দ্র করে গতকাল (শুক্রবার) রাত থেকেই সার্কিট হাউজ মাঠে অবস্থান নেয় হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার দলে দলে বাড়তে থাকতে মানুষের উপস্থিতি। ফলে শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠের বেশির ভাগ অংশে লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়। এরপর বেলা পৌনে ২টার দিকে ময়মনসিংহ স্টেডিয়াম মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করেন মিজানুর রহমান আজাহারী। পরে মাহফিল শেষ করে তিনি হেলিকপ্টারযোগে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ময়মনসিংহ ত্যাগ করেন।
আজাহারীর মাহফিল উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহ নগরীতে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়। এতে নগরজুড়ে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় সার্কিট হাউজ মাঠসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মোট ২২টি বড় পর্দায় এই মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এছাড়াও নগরীর জিলা স্কুল হোস্টেল মাঠে শুধু নারীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।