জুমবাংলা ডেস্ক : নিজের ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, তিনি তার জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে গেলে কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। যদিও ইউএনও বলছেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শ্রেণি পরিবর্তন করে রাতের আধাঁরে কাজ করায় তা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে শরীয়তপুরের সার্কিট হাউজ এলাকার বালুর মাঠে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার।
ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার জানান, শরীয়তপুরের ৮০ নম্বর ধানুকা মৌজার ১২১৬ নম্বর খতিয়ানের ১০০৭ নম্বর দাগের ২৩ শতাংশ জমির ক্রয়সূত্রে মালিক তিনি। ২০২১ সালে স্থানীয় নিরঞ্জন পাল নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি এই সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি সেই জায়গায় বালু ভরাট করে ঘর নির্মাণ করার জন্য খুঁটি গাড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে গত শনিবার সেই জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিজ এলাহী। পরে তারা এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ভরাট করা বালু ও নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন ওই নারীকে। পরবর্তীতে সেই নির্মাণ সামগ্রী উঠিয়ে নিজেদের জিম্মায় নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এদিকে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার কেনা সম্পত্তিতে ডিসি আমাকে উঠতে দেয় না। আমি কাজ করতে আসলে ডিসি বাধা দেয়। আমি ঘর তৈরির জন্য ডিসির কাছে পারমিশন আনতে গেলে তিনি আমাকে পারমিশন দেন না, পৌরসভায় গেলে পৌরসভাও আমাকে ফরম দেয় না। সেদিন ইউএনও আর এসিল্যান্ড এসে আমার জমির খুঁটি সরিয়ে নেয়। তারা বলেন ডিসির নির্দেশে তারা এটা করছে। আমি গরিব বলে ডিসি আমার সঙ্গে জুলুমবাজি করছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই। যদি তারা এই সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে নিয়ে যেতে চায় তাহলে তারা নিক। নয়তো আমাকে আমার সম্পত্তিতে কাজ করতে দিতে হবে।
ভুক্তভোগীর স্বামী মকবুল হোসেন লিটন বলেন, জায়গা আমাদের কেনা সম্পত্তি। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই জমির খাজনা দেওয়া আছে। আমি হার্টের রোগী, তারপরও গত এক বছর আমি ডিসি, এডিসির কাছে দৌঁড়াদৌড়ি করেছি। তারা আমার সমস্যার কথা না শুনে উল্টো আমাকে মূল্যায়ন করতো না। আমরা চাই এর একটা সুরাহা হোক।
এদিকে উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইলোরা ইয়াসমিন জানান, জায়গাটির শ্রেণি পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কাজ করে আসছিল একটি পক্ষ। তাদেরকে আদেশপত্র ও জমির কাগজপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকেন কাছে আসতে বললে সেখানে দেখা যায়, কাগজে মালিকানা নিয়ে কিছু ত্রুটি রয়েছে। তখন পূর্বের জেলা প্রশাসক তাদের আদালত থেকে মালিকানা ঠিক করে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করে শ্রেণি পরিবর্তন না করেই স্থাপনা তৈরি করছিল। সেজন্য জায়গাটিতে স্থাপনা তৈরিতে আমরা বাধা দিয়েছি। এছাড়াও অন্য একজন ব্যক্তি এই জমি তাদের দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তাহসিনা বেগম বলেন, উচ্ছেদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে ওই জায়গাটি একাধিক ব্যক্তি নিজের বলে দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে কয়েকদিন পরে আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পারবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।