সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে পড়ে থাকা গুঁড়ো পাথরবালিতে চাকা পিছলে পড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলে পেছন থেকে আসা ইটবোঝাই ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলেই মারা গেছে ওই মোটরসাইকেল চালক।
নিহত মোটরসাইকেল চালক মাসুদুর রহমান (কুসুম) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার উচুটিয়া এলাকার মৃত দিদার বক্স এর ছেলে। সে সাটুরিয়া উপজেলার কৈট্টা এলাকায় প্রশিকায় কর্মরত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার সদর উপজেলার জাগীর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গোলড়া হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, পাটুরিয়াগামী ইটবোঝাই একটি ট্রাক মাসুদুর রহমানের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে দুর্ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ মহাসড়কের ফাটল ও গর্ত বন্ধ করতে কিছু দিন আগে মেইনটেনেন্সের কাজ করেছে। সেসময় মহাসড়কের দুই পাশে প্রচুর গুঁড়ো পাথর ফেলে রেখেছিল। কাজ শেষে গুঁড়ো পাথরগুলো ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দিয়ে মহাসড়ক পরিষ্কার করার কথা ছিল, কিন্ত তারা সেটা করেনি। একারণে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন গাড়ির চাকা পিছলে যায়। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। আজও মহাসড়কের পাশ দিয়ে দুজন পথচারী হেটে যাচ্ছিল। এসময় একজন মোটরসাইকেল চালক তাদের পাশ দিয়ে যওয়ার সময় ব্রেক করেন। কিন্ত ব্রেক করার সাথে সাথেই তিনি চাকা পিছলে রাস্তার ওপর পড়ে যান। তখনই পেছন থেকে আসা একটি ইটবোঝাই ট্রাক ওই মোটরসাইকেল চালককে চাপা দেয় এবং মোটরসাইকেল চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক সাংবাদিকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রায় এক মাস আগে মহাসড়কের মেইনটেনেন্সের কাজ চলমান ছিল। সেসময় মহাসড়কের দুই পাশে প্রচুর গুঁড়ো পাথর পড়ে থাকতে দেখে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি ফোনে জানিয়েছিলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন কাজ শেষ হলেই ঝাড়ু দিয়ে গুঁড়ো পাথরগুলো ফেলে দেয়া হবে। কিন্ত কাজ শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সেগুলো পরিষ্কার করা হয়নি। একারণে মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
তবে গুঁড়ো পাথরের কারণে হওয়া এসব দুর্ঘটনার দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহরিয়ার আলম বলেন, একটা মানুষ মারা গেছে এটা অবশ্যই দু:খজনক। আমরা কখনোই চাইনা দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু হোক। মহাসড়কের ফাটল ও গর্ত বন্ধ করতে মেইনটেনেন্সের কাজ করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে এই গুঁড়ো পাথরই ব্যবহার করতে হয়। তারপর বিটুমিন দিয়ে পাথরগুলো কিছু সময় রাখতে হয়। কিছ সময় না রাখলে ফাটলের ভেতরে পাথরগুলো ঢোকেনা, আর সাথে সাথেই ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দিলে এটা টিকবেনা। যারা কাজ করেছে আমি তাদেরকে নির্দেশনা দিয়ে দিব যাতে ভবিষ্যতে এরকম না থাকে। মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে সবারই একটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আর গুঁড়ো পাথরের কারণেই যে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটার তো কোন ব্যাখ্যা নেই। আসলে ওই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে নাকি অন্য কোন কারণ আছে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।