জুমবাংলা ডেস্ক : এ যেন সিনেমার গল্প! পনেরো বছর বয়সী এক কিশোর নামাজের কথা বলে বের হয় বাড়ি থেকে। হঠাৎ সেই কিশোরের বাবার মোবাইল ফোনে আসে ক্ষুদেবার্তা।
অপহরণ করা হয়েছে তার ছেলেকে। দাবি করা হয় সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ। নইলে মিলবে ছেলের মরদেহ। কিছুক্ষণ পর পর আসতে থাকে এমন ক্ষুদেবার্তা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নিমজ্জিত মা-বাবা ছুটে যান পুলিশের কাছে। উদ্ধার হয় কিশোর। তবে ধরা পড়েনি অপহরণকারী। কারণ এ অপরহরণ নাটকের রচয়িতা কিশোর নিজেই।
গত শুক্রবার জুমার নামাজের কথা বলে রাজধানীর বাড্ডার বাসা থেকে বের হয় এ কিশোর। কিছুদূর সামনেই তাদের ফার্নিচার কারখানা। কিছুক্ষণ বসে থাকে সেখানে। পরে তাকে চলে যেতে দেখা যায়। নামাজ শেষ হওয়ার পর আর বাসায় ফেরেনি সেই কিশোর।
হঠাৎ তার বাবার মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদেবার্তা আসে। বলা হয়, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী। টাকা না পেলে হুমকি দেয়া হয় ছেলেকে মেরে ফেলার। একই রকম ক্ষুদেবার্তা আসে তার মামার মোবাইলেও। তবে সব মেসেজ আসে কিশোরের মোবাইল থেকেই। পাঠানো হয় নির্যাতনের ছবিও।
কোনো উপায় না দেখে বাবা ছুটে যান থানায়। প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা করা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশও।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দারা শনাক্ত করতে সক্ষম হয় অপরহণকারীর অবস্থান। এরই মধ্যে ওই কিশোরের বাবা অপহণকারীকে ২০ হাজার টাকা পাঠান। বিকাশের দোকান থেকে সেই টাকা তুলতে দেখা যায় কিশোরকে।
গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে গিয়ে দেখতে পান অপহরণকারী আর কেউ নয় খোদ ওই কিশোর। তার পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় এক কিশোরীকেও। উন্মোচিত হয় অপহরণ নাটক।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোর জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করেই অপহরণ নাটক সাজায় সে। বাসা থেকে বের হয়ে গাজীপুরে চলে যায় প্রেমিকার বাড়িতে। পরিকল্পনা ছিল তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার।
কিশোরীর দাবি অপহরণ নাটক সম্পর্কে জানতো না সে।
পুলিশ বলছে, বয়:সন্ধি অতিক্রম করা কিশোর নানারকম গেইমসে আসক্ত ছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, অল্প বয়সে তারা ভিডিও গেমস খেলার মাধ্যমে এ ধরনের সংস্কৃতিতে মিশে যাচ্ছে। তারা অপহরণের নাটক সাজিয়ে নিজের বাবার কাছে চাঁদাবাজি করবে এবং অপহরণের মতো একটা ভয়ংকর ধারাতে মামলা রুজু হবে এটা খুব কষ্টকর।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, সন্তানরা কী করছে পরিবার থেকে এটি যদি ঠিকমতো মনিটরিং করা না হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো আমাদের জন্য অশনি সংকেত।
ছেলের এমন কাণ্ডে বিব্রত বাবা-মা। এ বয়সের কিশোর-কিশোরীদের প্রতি বাবা-মাকে আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ পুলিশের।
সবার সামনে শিক্ষার্থী ও তার মাকে জুতাপেটা করলেন গ্রন্থাগারিক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।