জুমবাংলা ডেস্ক : জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা পরিষ্কার করাসহ ৭টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠন দুটির কার্যালয়ের সামনে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে এসব দাবি জানানো হয়।
এ সময় সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা জানান, আগামীকাল থেকে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে।
বিতরণ করা লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ কিভাবে ভয়াবহ এই ফ্যাসিবাদী জিঞ্জির ছিন্ন করেছে ঘোষণাপত্রে তার উল্লেখ থাকতে হবে।
আমরা চাই অধিকার, ইনসাফ ও মর্যাদাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র। ব্যক্তি ও সমাজের সহাবস্থানে বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রকল্প যেখানে ভোটাধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ।’
এতে আরো বলা হয়, ‘বাহাত্তর-পচাত্তরের একদলীয় শাসন এবং এক- এগারোর বিরাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে গঠন করার সংকল্প ব্যক্ত করবে এই ঘোষণাপত্র।’
এ ছাড়া বলা হয়েছে, ‘সরকারকে ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষণাপত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার সময় বেধে দিয়েছি। আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করার জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছি। এই ঘোষণাপত্রে এ জনগোষ্ঠীর বিগত দুই শত বছরের লড়াই-সংগ্রামের স্বীকৃতি থাকতে হবে। গত ১৬ বছরের জুলুম-নিপীড়ন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করাসহ অর্থ পাচারের খতিয়ান থাকতে হবে।’
লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘দুনিয়ার যেখানেই মুক্তিকামী জনগোষ্ঠী স্বৈরাচার উৎখাত করেছে কিংবা গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করেছে সেখানেই অভ্যুত্থানের শক্তি এ ধরনের ঐতিহাসিক অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে জনগণের সামনে ঘোষণাপত্র তুলে ধরেছে। ফরাসি বিপ্লব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আলজেরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের বিপ্লবী জনগোষ্ঠীর ইতিহাসে আমরা এ ধরনের নজির দেখেছি।’
এতে আরো বলা হয়, ‘ঘোষণাপত্রই হবে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের বৈধতার উৎস এবং পরবর্তী সংবিধানের ভিত্তিমূল।’
অন্যান্য ৬টি বিষয়ের মধ্যে আছে- জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আহতদের বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করতে হবে; ঘোষণাপত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিস্কারভাবে উল্লেখ থাকতে হবে; অভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনী ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে; ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের অঙ্গীকারব্যক্ত করতে হবে; নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয় প্রধান করে রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে এবং জুলাই অভ্যুত্থানের একমাত্র প্রধান লক্ষ্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা ছিল না, বরং গত ৫৩ বছরের বৈষম্য, শোষণ ও ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিলোপ করার লক্ষ্যে এ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা দিতে হবে বলে দাবি জানানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।