সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে নদীভাঙ্গন রোধে ও পদ্মা-যমুনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ব্যঙ্গ করে নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ডিজে পার্টি আয়োজনের দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ‘মানিকগঞ্জ নিউজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজে পোস্টটি করা হয়। তবে ওই ফেসবুক পেজটি কে বা কারা পরিচালনা করেন সে বিষয়ে জানা যায়নি।
ডিসিকে ব্যঙ্গ করে করা ওই পোস্টে লেখা হয়, ‘ডিসি স্যার কে সবাই অনুরোধ করা দরকার, নদী যেখানে ভাঙছে সেই এলাকায় গিয়ে একটা ডিজে পাটির আয়োজন করার।’ পোস্টে ‘ব্যপার টা হাস্যকর হয়লেও বাস্তব’ বলে মন্তব্য করেন আশরাফুল ইসলাম নামের একজন।
এর কিছুক্ষণ আগে, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ফুটবল টুর্ণামেন্ট ও নৌকা বাইচ আয়োজন সংক্রান্ত দুইটি ছবি পোস্ট করা হয়।
একই দিন রাতে নদীভাঙ্গনের কয়েকটি ভিডিওসহ আরো কিছু পোস্ট করা হয় ওই ফেসবুক পেজে। একটি পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়- ‘মানিকগঞ্জের এদের এত অভিযোগ কেনো, আমরা নৌকা বাইচ, ফুটবল খেলা দেখতে পারলে হয়’ এবং অপর একটির ক্যাপশনে লেখা হয়- ‘মানিকগঞ্জের কেউ না তারা মরুক, আমরা মেলা, খেলা আর নৌকা বাইচ দেখতে পারলে হবে ।’
ওই দুটি পোস্টের কমেন্টেও জেলা প্রশাসনের সমালোচনা করেন অনেকে। আশরাফুল ইসলাম নামের সেই ব্যক্তি লেখেন- ‘তাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল প্রশাসনের । বাইচ তো এতো প্রয়োজন ছিল না।’
রানা প্রধান নামের একজন লেখেন- ‘নদী ভাঙ্গন বন্ধ করতে গেলে প্রথমে বন্ধ করতে হবে অবৈধ বালু উত্তলন। নষ্ট করতে হবে ড্রেজার।’
ওই পেজের আরেকটি পোস্টে জেলা প্রশাসকের সমালোচনা করে মাসুদ রানা নামের একজন লেখেন- ‘মানিকগঞ্জের ডিসি মহোদয় রংগলিলায় ব্যাস্ত এই সব দেখার সময় নাই আর সময় থাকলেও দেখবে না এরা ওই মাটিখোরদের দলের ই লোক।’
উল্লেখ্য, এরআগে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে লিখিত অভিযোগ দেন নদীপাড়ের ভুক্তভোগীরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরপর গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এবং পাটুরিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের অপসারণের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লাকে। এরপর পরিচালিত হয় প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযান। তবে সেসব অভিযানের খবর আগে থেকেই টের পেয়ে যান বালু ব্যবসায়ীরা। অভিযানের আগেই অবৈধ ড্রেজার সড়িয়ে ফেলেন তারা। ফলে এখনো বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদীর তীরে অবৈধ বালু ব্যবসা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।