জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমবে, এমনটাই শোনা যাচ্ছিল। ইতোমধ্যে ভারতীয় কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। কিন্তু দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ এখনও বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। শুধু মানের দোহাই দিয়েই বিক্রেতারা বেশি দামে বিক্রি করছেন। তাই দেশি পেঁয়াজের দাম কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এই মুহূর্তে।
একই সঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষেরই অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজের মান নিয়ে। তারা জানিয়েছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের মান ভালো না থাকায় দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়।
শুক্রবার (২৩ জুন) সরেজমিনে মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে ও কাঁচাবাজার, পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে ঘুরে দেখা যায় পেঁয়াজ বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি।
মিরপুর ১ নম্বরের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২২ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের পাড়া-মহল্লার ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৮০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৩৫ টাকা কেজি দরে। আর মুদি দোকানগুলোয় দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা রুবেল বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম আর কমবে না। আমি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করি ৮০ টাকা করে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করি তিন কেজি ১০০ টাকায়।
মহল্লার দোকান জিদান জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা সনি বলেন, দেশি পেঁয়াজ আমার কেনা পড়ে বেশি, তাই বিক্রিও করি বেশি দামে। আমি বিক্রি করি ৮০ টাকা করে, কারণ কেনা আছে ৭০ টাকায়। এরপর আনতে যে ভাড়া লাগে, সেটাও তো ধরতে হবে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমি রাখি না। অনেক নষ্ট বের হয়। আবার ভালো দেখে আনলেও দ্রুত সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এতে আমার লস হয়।
সিয়াম বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা শাকিল বলেন, আমার কাছে বিভিন্ন রকমের পেঁয়াজ আছে। সাইজ আর মান ভিন্ন। ভারতীয় পেঁয়াজ আছে, ২২ টাকা থেকে ৩২ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে মানভেদে দুই-তিন রকমের আছে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করি ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত। সাধারণত এলাকার মুদি দোকানগুলোয় বাছাই করা ভালো পেঁয়াজগুলো নেয়। আর যারা ভ্যানে করে বিক্রি করে, তারা আরেকটু কম দামেরগুলো নেয়।
ভারতীয় পেঁয়াজ সম্পর্কে অভিযোগ করে শাকিল বলেন, ভারতীয় সেসব পেঁয়াজ আমরা পাই, সেগুলোর মান ভালো নয়। ওরা আমাদের থার্ড গ্রেডের পেঁয়াজগুলো দেয়। ভালোগুলো দেয় না। আমরা ৫০ কেজির বস্তায় দুই কেজির মতো নষ্ট পেঁয়াজ পাই। আবার নষ্ট পেঁয়াজ বাছাই করাই লোক দিয়ে, তাদেরও টাকা দিতে হয়। এভাবেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়।
আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী শাহ আলী বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ অনেক নষ্ট বের হয়। তখন ১০ টাকায়ও বিক্রি করি। এমনিতে ভালোগুলো ২৫ টাকায় বিক্রি করি।
কাঁচাবাজারে পেঁয়াজের খুচরা বিক্রেতা মারুফ জানান, তিনি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, মনে হয় না দেশি পেঁয়াজের দাম আর কমবে। কারণ ভারতীয় পেঁয়াজের মান খারাপ।
বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম তো বেশিই। কিন্তু কী করার? খেতে তো হবেই। দাম বেশি হলে ভারতীয় পেঁয়াজ কেন কিনছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের টেস্ট নেই। তাই কম হলেও দেশি পেঁয়াজই খাই আমরা।
আরেক ক্রেতা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজগুলো খুব একটা ভালো হয় না। একটু বেছে নিতে হয়, কিন্তু দোকানদাররা আবার বাছতে দিতে চান না। এতে আমাদেরও লস হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।