জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নুজহাত মেহজাবিন কর্তৃক পুরুষ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, ছাত্র উপদেষ্টার পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং লিখিত অভিযোগ সত্ত্বেও বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মসূচি শুরুর পর শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন। ফলে ২০২১-২২ সেশনের জন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যবর্তী পরীক্ষা সকাল ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে শুরু হয়। পরে বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের বিচারের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা কয়েকদিন আগে বিভাগের সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের নিয়ে ট্যুরের আয়োজন করেছি। এতে বিভাগের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। অধিদপ্তরের ব্যানারে সফরটি হয়নি। ২০১৯-২০ সেশনের ছাত্রী নুজহাত মেহজাবিন আমাদের ইভেন্টে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সবাইকে ‘সেক্সুয়াল হ্যারাজার’ এবং ‘মেয়েদেরকে একবারে জঙ্গল দেখিয়ে আনবে’ এর মতো বিভিন্ন ধরনের কথায বলেছিল। এর বিরুদ্ধে ১১ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দিলেও চেয়ারম্যান কোনো ব্যবস্থা নেননি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এছাড়াও বিভিন্ন সময় নুজহাত মেহজাবিন, মায়মুনা রহমান রিদিতসহ আরও কয়েকজন ছেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করে। ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ইমরানের সাথে গত চার বছর ধরে হয়রানির শিকার হয়ে আসতেছে। সে আমাদের সাথে অংশগ্রহণ করতে চাইলে শিক্ষক তাকে কল দিয়ে বলে তাকে রিকমেন্ডেশন লেটার দিবে না। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘সমতার ডিপার্টমেন্টে অসমতা চলবেনা’, ‘শিক্ষকের সামনে হেনস্তা শিক্ষক কেন নিরব’, ‘বুলিংকারী, হেনস্তাকারীর বিচার চাই, বিচার চাই’ বলে স্লোগান দেয়।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, নুঝহাত মেহজাবিন ছেলে শিক্ষার্থীদের সেক্সুয়াল হ্যারেজার বলেছে। আমরা ডিপার্টমেন্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোনো বিচার পাইনি। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার্থী উপদেষ্টা দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি কিন্তু ডিপার্টমেন্ট থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এছাড়াও কতিপয় মেয়েদের দ্বারা মিথ্যা অভিযোগ করে আমাদেরকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অভিযোগের পরের দিন নুঝাত মেহজাবিন বলে, আমার চার বছরের পিটানোর সখ, আমি কাটা চামচ দিয়ে চোখ তুলে নিবে বলে শিক্ষার্থীদের গ্রুপে আমাদেরকে হুমকি দিয়েছে।
শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্যের প্রতি অভিযোগ করে ওই শিক্ষার্থী বলেন, কতিপয় মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে গ্রুপিং করে মিথ্যা অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা তার রুমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এভাবে তার রুমকে টর্চার সেলে পরিণত করেছে। তার বিভাগে ওনার প্রতি আমাদের আস্থা নেই বলে অভিযোগ দেয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। তিনি ঠিকমতো ক্লাস নেন না, মেটেরিয়ালস দেন না। ফলে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এটার বিরুদ্ধে কথা বলা যায়না, প্রতিবাদ করা যায়না। সবুজ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের আন্দোলনে মেয়ে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছে কিন্তু শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছে না। অদিতি সবুর ম্যাম তাদেরকে বলেন ‘you will be the next target’
এ প্রসঙ্গে সহযোগী প্রোক্টর মুহাম্মদ বদরুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা গতকাল থেকে ডিপার্টমেন্টে তালা দিয়ে রেখেছে। আমরা তাদের অভিযোগ শুনে বিচারের আশ্বাস দিয়েছি। তারা আমাদের প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিত করেছে। এখন পরীক্ষাসহ অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।