জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে নৌকা ধরে রাখতে পারলেন না দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে পরাজিত হলেন দুই বারের সংসদ সদস্য। একইসাথে সাভার-আশুলিয়াবাসী নতুন মুখ হিসেবে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে বেছে নিল।
আগেই ধারণা করা হয়েছিল ঢাকা-১৯ আসনে এবার লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। নৌকা, ঈগল আর ট্রাকের মধ্যে যে কাউকে বেছে নিতে পারে জনগণ। আর এ যুদ্ধে এগিয়ে ছিল ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ ও ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়াই করা আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
২৯২টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে সে বিষয়টি দেখা গেলো। নির্বাচনে সাইফুল ইসলাম ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। ৮ হাজার ২১০ ভোট বেশি পেয়ে সাইফুল বিজয়ী হয়েছেন।
এ দুজনের ভোটের ব্যবধান কাছাকাছি হলেও নৌকার প্রার্থী এনামুর রহমান ছিলেন অনেক দূরে। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ভোট পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১টি। সাইফুল ইসলামের থেকে তিনি প্রায় ২৮ হাজার ভোট কম পেয়েছেন।
মূলত, তার প্রতিশ্রুত অনেক কাজ করতে না পারা, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকার পাশাপাশি স্থানীয়দের সাথেও যোগাযোগ ছিল না এনামুরের। এছাড়া, তার বাড়ি নরসিংদীতে হওয়ায় আঞ্চলিকতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায় এবারের ভোটে। ফলে অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থক এবার দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে যাওয়ায় আগেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি ছিল নৌকা। শেষ পর্যন্ত জনগণের বিচারে তিনি উৎরে যেতে পারলেন না। হাসতে পারলেন না বিজয়ের হাসি।
অন্যদিকে ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুলও সংসদ সদস্য হতে সেই পদ ছেড়ে প্রার্থী হয়েছিলেন। এই ধামসোনা ইউনিয়ন ভোটার সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। এই ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা প্রায় পৌনে দুই লাখ, যেখানে পুরো নির্বাচনি এলাকায় ভোটার সংখ্যা সাড়ে সাত লাখের কিছু বেশি।
এই সুবিধাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন সাইফুল। পাশাপাশি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও তিনি সুবিধা পেয়েছেন। আশুলিয়ার বাইরে পাথালিয়া, শিমুলিয়া, ধামসোনা, ইয়ারপুর ইউনিয়নের পাশাপাশি সাভারের একাংশের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন তিনি।
ঢাকা-১৯ আসন সাভার উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে মোট ভোটার ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬৮ জন, নারী ভোটার ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ১৩ জন। আসনটিতে সর্বমোট ভোটকেন্দ্র ২৯২টি ও ভোটকক্ষ ১ হাজার ৭০৫টি।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৬৫০ টি।
এই আসনে আর লড়েছেন আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ইসরাফিল হোসেন সাভারী, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশের মাহাবুবুল হাসান এবং গণফ্রন্ট এর নূরুল আলম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।