জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানী ঢাকায় নির্মাণ আইন না মানার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, যেখানে মানুষ এবং সম্পদ উভয়কেই ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সম্প্রতি, রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ বিষয়ে একটি সেমিনার, যেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম এবং রাজউক চেয়ারম্যান এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা অকপটে ব্যক্ত করেছেন যে, ভবন নির্মাণে আইন এবং নিরাপত্তা বিধি অনুসরণ না করার ফলে রাজধানীর বাসিন্দাদের জন্য বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি।
Table of Contents
নির্মাণ আইন না মানার পরিণতি: অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও দায়িত্ব
অগ্নিকাণ্ডের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে গৃহায়ন সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, “অসমর্থনযোগ্য ভবন নির্মাণের অবস্থা আমাদের রাজধানীকে অগ্নিকাণ্ডের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।” তিনি উল্লেখ করেন, “কয়েক মাস আগে ঘটে যাওয়া একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা অনেক লোককে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখেছি। এই ঘটনার দায় আমাদের সকলের; রাজউক এবং গৃহায়ন মন্ত্রণালয় কেউই এ দায় এড়াতে পারে না।”
রাজউক চেয়ারম্যান আরও জানান, ৩,৩৮২টি ভবন চিহ্নিত করে পর্যবেক্ষণ ও উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে হলে নির্মাণ আইন মানতেই হবে। যদি আইন না মানা হয় তবে আমাদের নগরবাসীকে চরম পরিণতির শিকার হতে হবে।”
বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা
গত কয়েক বছরে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। উন্মুক্ত ভবন, যেখানে নিরাপত্তা মানের অভাব রয়েছে এবং নির্মাণ আইনকে অগ্রাহ্য করা হয়, সেখানে দমকল বাহিনী নিয়মিতই কাজ করলেও, তা প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে। বাস্তবতা হলো, অনেক মানুষই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন নয় এবং আইন ও নিয়মের প্রতি সম্মান জানানো হচ্ছে না, যা যেন তাদের জীবনকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে অনুষ্ঠিত একটি জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা বেড়েছে 30%। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন।
রাজউকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা ভবন নির্মাণের সকল সংক্রান্ত সেবা এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো গৃহায়ন খাতে স্বচ্ছতা এবং সংকটকম পরিস্থিতিতে দ্রুত সেবা ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
রাজধানী ঢাকায় নির্মাণ এবং নিরাপত্তা বিধিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে এবং সরকারের অনেক উদ্যোগ এবং সচেতনতার প্রচারণার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব। জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখতে এই শিক্ষার প্রচার অপরিহার্য।
এছাড়াও, রাজউক কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণের জন্য নতুন নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে কাজ করছে, যাতে নির্মাণের সময় সঠিক মান ও নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়। কর্তৃপক্ষের মতে, “নিরাপদ ভবন নির্মাণের জন্য ন্যূনতম মানদণ্ড স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার ফলে ভবনের স্থায়িত্ব ও জনসাধারণের জীবন রক্ষা হবে।”
এখন প্রশ্ন একই, যে ভবন নির্মাণের সময় আইন লঙ্ঘনের জন্য দায়ী কে? গৃহায়ন সচিবের মতে, “এ দায়িত্ব সরকার ও রাজউকের, কিন্তু এর জন্য আমাদের সমাজের সকলের মনোভাব পরিবর্তনের প্রয়োজন।”
অবহেলা এবং অসচেতনতাকে পরাজিত করে, সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
গৃহায়ন সচিবের বক্তব্যে আশার আলো
গৃহায়ন সচিবের কথা অনুযায়ী, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটি প্রান্ত হতে পারে প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া। বিভিন্ন দেশে প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং নির্ভরযোগ্য হয়েছে। দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও গবেষণার সম্প্রসারণের জন্য সরকারের এবং অধিদপ্তরের একযোগে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার মাধ্যমে নিরাপদ ভবন নির্মাণ এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য করুন। নিরাপদ ভবন নির্মাণে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে, নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে।
রাজধানীর বাসিন্দাদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে সরকারের ক্ষমতা ও নাগরিকদের আইন মেনে চলার আগ্রহ অপরিহার্য। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ঢাকায় নির্মাণ নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে তারা কাজ করছে।
সকল নাগরিককে সচেতন হতে হবে এবং তারা নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে হবে।
FAQs
রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের কারণে কি সরাসরি মানবসম্পদ ক্ষতির আশঙ্কা করে?
হ্যাঁ, রাজধানীতে নির্মাণ আইন না মানলে অগ্নিকাণ্ডের ফলে মানুষের জীবনহানি হতে পারে। এটি সবার জন্য একটি বড় ঝুঁকি।কিভাবে ঢাকা শহরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব?
ঢাকা শহরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে নিয়মিত মনিটরিং এবং জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে।রাজউক কিভাবে ভবন ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন নির্দেশিকা প্রণয়ন করছে?
রাজউক ভবনের নির্মাণে নতুন মানদণ্ড এবং নির্দেশিকার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।নিরাপদ রাজধানী গঠনে জনগণের ভূমিকা কি?
জনগণের আইন মেনে চলা এবং সচেতনতা বাড়ানো নিরাপদ রাজধানী গঠনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।- নতুন প্রযুক্তি কি ভবন নির্মাণে সাহায্য করতে পারে?
হ্যাঁ, নতুন প্রযুক্তি ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া সহজ করতে পারে এবং নিরাপত্তা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।